সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

চাঁদপুরে মাইক ম্যান আলমগীর হত্যার প্রধান আসামি গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি, চাঁদপুর
প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২৫, ০২:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

চাঁদপুরে মাইক ম্যান আলমগীর হত্যার প্রধান আসামি গ্রেফতার

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে আলোচিত ‘মাইক ম্যান’ আলমগীর হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি তাজুল ইসলাম তপনকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে তাকে চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করে শাহরাস্তি থানা পুলিশ।


বিজ্ঞাপন


এর আগে, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ খান এলাকার কসাইবাড়ি এলাকা থেকে সোমবার (২৩ জুন) দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন শাহরাস্তি থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল বাসার।

তিনি বলেন, তপন সেখানে ভ্যান গাড়িতে জুতা বিক্রেতার ছদ্মবেশে অবস্থান করছিলো। তপন চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের খিতারপাড় গ্রামের শামছুল হকের পুত্র। সে এলাকায় একজন কুখ্যাত বখাটে হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলার মনিপুর গ্রামের একটি প্রবাসীর বাড়ির ছাদে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয় মো. আলমগীর (৩৬) নামের এক যুবককে।

নিহত আলমগীর একই গ্রামের বাসিন্দা ও সোনিয়ার প্রতিবেশী। এলাকায় তিনি ‘মাইক ম্যান’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এলাকার কারো মৃত্যু হলে জানাজার সংবাদ মাইকে প্রচার করতেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


হত্যাকাণ্ডের পরপর পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে আলমগীরের মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে দু’টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ, যার একটি ছিল তপনের। এই সূত্র ধরে তদন্তে অগ্রগতি হয়। ঘটনার রাতেই ওই বাড়ির মালিক আবুল হোসেন মানিকের স্ত্রী খোদেজা বেগম ও মেয়ে সোনিয়াকে আটক করে পুলিশ।

সোনিয়ার ২ দিনের রিমান্ডে আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য—আলমগীরের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। সোনিয়ার স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে, তপনের সঙ্গেও তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং আলমগীর যেন সেই সম্পর্কের প্রতিবন্ধক না হয়, তাই তাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।

ঘটনার পর থেকেই মামলার মূল হোতা তপন পলাতক ছিলেন। অবশেষে ৩ মাস পর প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ খান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে শাহরাস্তি থানা পুলিশ।

কচুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবদুল হাই জানান, তপনকে গ্রেফতারের পর থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আলমগীর হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

এলাকাবাসী ইতোমধ্যে মানববন্ধন করে তপনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। স্থানীয়ভাবে সোনিয়ার একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক নিয়েও নানা আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে।

শাহরাস্তির এই আলোচিত হত্যা মামলায় মূল হোতা তপন ফতার হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে। তবে তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এবং অন্যান্য জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের দাবি অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর