কুমিল্লায় দাউদকান্দিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে পাঁচজনসহ মোট ছয়জন মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে রাজধানীর কাকরাইল ইসলামিয়া হাসপাতালে খোকন মিয়া (৫৫) নামে একজন মারা গেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি দাউদকান্দি পৌরসভার দৌলদ্দি গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে। প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। পৌরসভার দু’টি ওয়ার্ডকে ডেঙ্গুর হটস্পট বলা হলেও আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের সাথে মিল নেই বাস্তবতার।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, দাউদকান্দি পৌরসদরে ৫ নম্বর ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইল ইসলামিয়া হাসপাতালে খোকন মিয়া (৫৫) নামে একজন মারা গেছে। সে দাউদকান্দি পৌরসভার দৌলদ্দি গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে। ডেঙ্গু নিয়ে ২২ জুন ওই হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এর আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২২ জুন বলদাখাল গ্রামের হাফিজ ডাক্তারের ছেলে নুরুল আমিন (৫৬) ঢাকার প্রোএ্যাকটিভ হাসপাতালে মারা যায়। গত ১৩ জুন রাজধানীর ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হসপিটালে দোনারচর গ্রামের রাসেল সরকারের স্ত্রী শাহীনুর আক্তার (২৪), ১৮ জুন একই গ্রামের নাজির চৌধুরীর স্ত্রী সালমা বেগম (৫৬) রাজধানীর মিরপুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং সবজিকান্দি গ্রামের মৃত শাহজালাল মিয়ার স্ত্রী জোৎস্না বেগম (৬০) ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২৫ মে মারা যান। এতে পুরো পৌরসভা এলাকায় ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষের মাঝে এক ধরনের ভীতি ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সমাজসেবক আব্দুস সাত্তার বলেন, স্থানীয় প্রশাসন চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু নিয়ন্ত্রণে আসছে না। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বড় ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ বা ডেঙ্গু মহামারি এলাকা ঘোষণা করে প্রজেক্ট হিসেবে নিয়ে কাজ করতে হবে। পৌরসভার দু’টি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে অফিসিয়ালি ডেঙ্গু মহামারি এলাকা ঘোষণা করে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করে চিকিৎসা সেবা দিতে করতে হবে। আর বিগত দিনে এখানে অপরিকল্পিত উন্নয়নে ড্রেনেজ ব্যবস্থার করুন অবস্থার কারণে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় আজকের এই অবস্থা। আর এখন চাইলেই পৌর প্রশাসক এর সমাধান করতে পারবে না। তারপরও পৌর প্রশাসক সাধ্যমতো চেষ্টা করতেছেন।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, এই পর্যন্ত সরকারিভাবে প্রায় চার শতাধিক আক্রান্তের তথ্য পেয়েছি। মে মাস থেকে পৌর এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত শুরু হয়। আজ মঙ্গলবার ১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আজকেসহ মোট ছয়জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
তিনি জানান, অফিসিয়ালিভাবে দাউদকান্দি পৌরসভাকে ডেঙ্গু মহামারি ঘোষণা করা হয়নি। তবে কি কারণে এখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত বাড়ছে তা নির্ণয়ে জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে একটি টিম এসে নমুনা সংগ্রহ করেছে।
দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম বলেন, পৌরসভার স্থানীয় ছাত্র ও রাজনৈতিক নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত টিম ডেঙ্গু সচেতনতায় মতবিনিময় সভা, লিফলেট, ব্যানার, মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া ঝোপঝাড় পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম চলছে।
প্রতিনিধি/এসএস

