সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

যুবদল নেতার জামিনের জন্য বিচারককে ফোন, সমালোচনার ঝড়

জেলা প্রতিনিধি, নাটোর
প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

যুবদল নেতার জামিনের জন্য বিচারককে ফোন, সমালোচনার ঝড়

নাটোরে এক পথসভায় বিএনপির নেতা আবুল কাশেমের বক্তব্য নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।

সম্প্রতি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবুল কাশেম এক পথসভায় বক্তব্য দেয়ার সময় বলেন, জেলা যুবদলের এক নেতার জামিনের জন্য তিনি বিচারককে ফোন করেছেন। বিচারক জামিনের অপারগতা প্রকাশ করেছেন।


বিজ্ঞাপন


বক্তব্যে ওই নেতা আরও বলেন, যুবদলের সেই নেতার (শফিকুল ইসলাম মালেক) নামে দুইটা গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখা যায়, আবুল কাশেম ওয়ারেন্টের আসামি মালেককে তার পেছনে নিয়ে বলছেন, আমি বিচারককে ফোন দিয়েছি জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মালেককে জামিন করার বিষয়ে। বিচারক অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি অস্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, আমরা এমন দল করি যে জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক তার জামিন হয় না। এখনও তার বিরুদ্ধে দুইটা ওয়ারেন্ট। আমরা যাকে কমিটিতে নিয়ে এসেছি পিপি সাহেব আমার ফোন ধরেন না। বিচারককে ফোন দিলে তিনি (বিচারক) বলেন, আমি জামিন দিতে পারব না, জামিন যদি দেই অবস্থা খারাপ হবে।

এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। খোদ বিএনপি নেতাকর্মীরাই বলছেন জেলা বিএনপির সদস্য আবুল কাশেমের বক্তব্য আদালতের বিচার কাজে হস্তক্ষেপ এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার পরিপন্থি।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস বলেন, বিএনপি নেতা আবুল কাশেম গর্ব করে বলেছেন যে, বিচারককে ফোন দিয়ে জামিন দেওয়ার কথা। আমরা মনে করি এটা তারেক রহমানের ৩১ দফা পরিপন্থি। কেননা ৩১ দফায় বলা রয়েছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের কথা। তিনি কখনোই বিচারককে ফোন দিয়ে জামিন দিতে বলতে পারেন না। তার এই বক্তব্য আমাদের দলের জন্য ক্ষতির কারণ।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_IMG-20250624-WA0037

বিএনপি নেতা কাজী শাহ আলম বলেন, বিএনপি আইনের শাসন বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্যই দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছে। আমার জীবনে শুনি নাই নাটোর বিএনপির কোনো নেতা এরকম কথা এর আগে কখনও বলেছেন। আবুল কাশেমের এই বক্তব্য দলের জন্য ক্ষতিকারক এবং দলীয় নীতি পরিপন্থি। এই বক্তব্য ইতি মধ্যেই ভাইরাল হয়েছে তাহলে দেশের জনগণ কিংবা নাটোরের জনগণ বিএনপি সম্পর্কে কি ধারণা নিবে। আমরা চাই দলীয় হাইকমান্ড বিষয়গুলো তদন্ত করে এমন বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চাইবেন।

এ বিষয়ে নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতি সাধারণ সম্পাদক শরিফুল হক মুক্তা বলেন, সেপারেশন অফ দ্য জুডিশিয়ারিতে হাকিমের (বিচারকের) কাছে মামলার বিষয়ে তদবির করা আইনসংগত নয়। এইসব কথা বলা আইন বিরোধী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্য আবুল কাশেম বলেন,‌ আমি এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

আরও পড়ুন

বিএনপি-চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বৈঠকে অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশা

এ বিষয়ে নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তার (আবুল কাশেমের) এমন বক্তব্যে জেলা বিএনপি বিব্রত। আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করব।তবে আবুল কাশেমকে লিখিতভাবে কোনো কিছু জানানো হয়নি বলে জানান, জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা।

নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন বলেন, বক্তব্য দেওয়া তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে গ্রেফতারি পরোয়ানাপ্রাপ্ত কোনো আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এমনটা হওয়ার সুযোগ নেই। তাদেরকে অবশ্যই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। এমন আসামিকে কেউ প্রশ্রয় দিলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর