সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নরসিংদীর ডিসি অফিসের সহকারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি, নরসিংদী
প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২৫, ০৫:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

নরসিংদীর ডিসি অফিসের সহকারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী নাজির ইকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ের কথা বলে আবাসিক হোটেলে নিয়ে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় সোমবার (২৩ জুন) ভুক্তভোগী ওই নারী নরসিংদীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করলে মাধবদী থানাকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নরসিংদী আদালতের আইনজীবী খন্দকার আব্দুল হালিম।


বিজ্ঞাপন


এর আগে গত ৯ মার্চ সন্ধ্যা থেকে ১০ মার্চ সকাল পর্যন্ত মাধবদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গাজী আবাসিক হোটেলে দফায় দফায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ইকরাম হোসেন (৪২) নরসিংদী পৌর শহরের পূর্ব ভেলানগর এলাকার মৃত ইলিয়াসের ছেলে ও নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী নাজির পদে কর্মরত।

আরও পড়ুন

নারীর সঙ্গে ভিডিও ভাইরাল: বরগুনার সেই ডিসি ওএসডি

ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ, তিনি প্যারালাইসড হয়ে অসুস্থ পড়া বীরমুক্তিযোদ্ধা বাবার জন্য হুইল চেয়ারের আবেদন করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। পরে ওই আবেদনপত্র থেকে পাওয়া তার মোবাইল নাম্বারে ফোন করে দ্রুত একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী নাজির ইকরাম হোসেন। এরপর থেকে ওই নারীর সাথে নিয়মিত ফোনে কথা বলা শুরু করেন ইকরাম। এক পর্যায়ে ওই নারীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন নাজির ইকরাম হোসেন। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিয়ের বিষয়ে অভিভাবকদের সাথে কথা বলার জন্য বলেন ওই নারী। সরকারি চাকরির বিধান অনুযায়ী বিয়ে করতে হলে প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন জানিয়ে ওই নারীর সাথে ফোনে কথা বলা অব্যাহত রাখেন ইকরাম হোসেন।


বিজ্ঞাপন


এক পর্যায়ে সুসম্পর্ক গড়ে উঠলে ওই নারীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নেন ইকরাম হোসেন এবং বিভিন্ন জেলায় ঘুরতে যান তারা। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে কাজী ডেকে বিয়ে করার কথা বলে ৯ মার্চ ওই নারীকে নিয়ে মাধবদীর গাজী আবাসিক হোটেলে কক্ষ ভাড়া করেন নাজির ইকরাম হোসেন। এসময় কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ের কথা বললে রমজান মাস হওয়ায় তারাবি নামাজের পর কাজী ওই হোটেলে এসেই বিয়ে পড়াবেন বলে জানান। এ সময় বিয়ের প্রলোভনে ওই নারীকে হোটেলের কক্ষে ধর্ষণ করেন ইকরাম হোসেন। ধর্ষণের পর কাজী কখন আসবে জানতে চাইলে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলেন। পরে দফায় দফায় ধর্ষণের পর রাত ১১টার দিকে কাজী আসবে কী না জানতে চান ওই নারী। এ সময় কক্ষের বাইরে গিয়ে ফোনে কথা বলে ১০ মিনিট পর হোটেল কক্ষে গিয়ে ইকরাম জানান কাজী অসুস্থ হয়ে পড়ায় এখন আসতে পারছেন না। এরপর রাতভর ওই নারীকে হোটেল কক্ষে ধর্ষণ করেন ইকরাম হোসেন। রাতে নারীর গলায় পরিহিত স্বর্ণের চেইন ছিঁড়ে গেলে তা মেরামত করে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে নেয় ইকরাম হোসেন।

আরও পড়ুন

সেই ডিসি ও নারীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ভুক্তভোগী নারী বলেন, এরপর হতে বিয়ের জন্য চাপ দেয়া হলে চাকরির সমস্যার কথা বলে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন ইকরাম। এক পর্যায়ে গত ১৬ জুন বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানানোসহ ধার নেওয়া টাকা ও স্বর্ণের চেইন ফেরত দিতে পারবে না বলেও জানায় ইকরাম। এ ঘটনার পর বিষয়টি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিহাব সারার অভিকে মৌখিকভাবে জানিয়ে কোনো প্রতিকার পাননি তিনি। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয় পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত সহকারী নাজির ইকরাম হোসেনকে। বন্ধ রয়েছে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও।

নরসিংদী আদালতের আইনজীবী খন্দকার আব্দুল হালিম বলেন, নরসিংদীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক মো. আলী আহসান অভিযোগটি আমলে নিয়ে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এফআইআর করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন।

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আদালতের এমন আদেশ এখনও পর্যন্ত হাতে পাইনি। আদেশ পাওয়ার পর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর