শরীয়তপুর নড়িয়ার ঘড়িসারে রাজনীতির রঙ বদলে নতুন পরিচয়ে সামনে এসেছেন এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা ও মাদককারবারি তাজিম দেওয়ান।
মাদক নিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া তাজিম দেওয়ান বর্তমানে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন শ্রমিক দলের নবগঠিত ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। এ ঘটনায় সমালোচনা জন্ম দিয়েছে পুরো উপজেলাজুড়ে।
বিজ্ঞাপন
দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনে সক্রিয় থাকা তাজিম দেওয়ান হঠাৎ এই রাজনৈতিক মেরু পরিবর্তন স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছে। ঘরিসার ইউনিয়নের একাধিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তাজিম খানের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। তারা এলাকায় মাদকের রমরমা ব্যবসা করতেন। ২০২০ সালে ইয়াবা নিয়ে একবার ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। এই ব্যক্তি হঠাৎ করে কীভাবে শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক হন!
বর্তমানে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনে সম্পৃক্ততা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, যে ব্যক্তি অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতেন, মাদক কারবারের সাথে জড়িত ছিলেন, তিনি কীভাবে এখন বিএনপির নেতৃত্বে আসেন?
ঘড়িসার ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনির সরকার বলেন, তাজিমের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। সে আমাদের সাথে আওয়ামী লীগের রাজনীতির কার্যক্রমে সক্রিয় ছিল। মাদকের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার আর তার বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা আছে সেটা কি মামলা তা তিনি জানেন না।

বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর বলেন, তাজিমের চাচা ইউনিয়ন যুবলীগের সি: সহ-সভাপতি, তার বড় ভাই স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে পুরো আওয়ামী লীগ পরিবারের লোক হয়ে কীভাবে ভোল্ট পাল্টিয়ে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে গেলো সেটা জানি না। তবে ওরা দুই ভাই এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা ও অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী।
এদিকে তাজিম দেওয়ান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছাত্রলীগের যে কমিটির কথা বলা হচ্ছে, সেটি ভুয়া ও এডিট করা ছবি। আমি কখনও কোনো ছাত্রলীগ কমিটিতে ছিলাম না। তবে মাদক মামলার বিষয় তিনি বলেন, তাকে ষড়যন্ত্রভাবে ফাঁসানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন
নড়িয়া উপজেলার শ্রমিক দলের সভাপতি সাইফুল শিকারি বলেন, তাজিম দেওয়ান ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল না। তবে মাদক কারবারের সাথে জড়িত কি না, সেটা জানি না। যদি মাদক কারবারের সাথে জড়িত হয় তাহলে সেটা সংগঠনের পরিপন্থি।
জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কাইয়ুম মুন্সী চুন্নু বলেন, তাজিম ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত না বলে জানিয়েছেন নড়িয়া উপজেলার সদস্য সচিব। তবে মাদকের সাথে জড়িত থাকলে তার ওই পদ থেকে তাকে অপসারণ করা হবে।
প্রতিনিধি/এসএস

