পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে বেইলি ব্রিজ ভেঙে কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক খালে পড়ে গেছে। এতে কলারন-সন্যাসী-মোরেলগঞ্জ-মোংলা-শরণখোলা রুটসহ একাধিক এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ৬ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। সব থেকে বেশি দুশ্চিন্তায় আছে ৬ গ্রামের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় স্থানীয়দের কপালে চিন্তার ভাজ। অতি দ্রুত ব্রিজ মেরামত করে সাধারণ মানুষের চলাচলের উপযোগী করে তোলার দাবি এলাকাবাসীর। সঙ্গে স্থায়ী সমাধান চায় স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন
ঘটনার তৃতীয় দিন রোববার (২২ জুন) সকালে দেখা যায়, ডুবে যাওয়া বেইলি ব্রিজের প্লেটগুলো সরানো হলেও ট্রাকটি এখনও উদ্ধার করা যায়নি। এতে বন্ধ রয়েছে মেরামত কাজ।
এর আগে শুক্রবার (২০ জুন) ভোর রাত ৪টার দিকে ইন্দুরকানী উপজেলার চন্ডিপুর মালবাড়ি এলাকায় ব্রিজ ভেঙে ট্রাকটি খালে পড়ে যায়। ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর থেকে পুরো রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে ইন্দুরকানী, কলারন, সন্ন্যাসী, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা, শরণখোলা এলাকার হাজারও মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। শিক্ষার্থী, রোগী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ সব শ্রেণির মানুষ এখন চরম ভোগান্তির শিকার। স্থানীয়রা বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় পুরোপুরি অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও নেওয়া হয়নি মেরামতের কোনো উদ্যোগ। ফলে এখন চরম দুর্ভোগের শিকার তারা।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় বাসিন্দা মো. হিরু মাঝি বলেন, প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়েই আমরা যাতায়াত করি, শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যান। এখন বিকল্প কোনো রাস্তা নেই, হেঁটেও পার হওয়া যাচ্ছে না। জরুরি রোগী নিয়ে বের হতে হলে আমরা বড় বিপদে পড়ব। এই ব্রিজই ছিল আমাদের শহরে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। দ্রুত ব্রিজটি মেরামত না হলে আরও বড় সমস্যায় পড়তে হবে আমাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হালিম বলেন, বাড়ি বসে শুনেছি ব্রিজের কাজ চলছে কিন্তু এখানে এসে দেখলাম কাজ বন্ধ। এভাবে চললে আগামী এক মাসেও এই ব্রিজ ঠিক হবে না।

স্থানীয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মো. সাদমান বলেন, আগামী ২৬ তারিখ আমাদের এইচএসসি বাংলা পরীক্ষা। এই ব্রিজটি এর আগে মেরামত করা না হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। আমাদের অনেক পথ ঘুরে পরীক্ষার সেন্টারে যেতে হবে। আমাদের অনেক সময় নষ্ট হবে।
স্থানীয় এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো. ওমর জমাদ্দার বলেন, আগামী ২৬ তারিখ আমাদের এইচএসসি বাংলা পরীক্ষা। এই ব্রিজটি এর আগে মেরামত করা না হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। আমাদের অনেক পথ বেশি ঘুরে পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে হবে। বিষয়টি নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
বেইলি ব্রিজ মেরামত শ্রমিক মিজান সরদার বলেন, গতকাল সারাদিন কাজ করেছি। সকাল থেকে এখনও কাজ শুরু করতে পারি নাই। ট্রাক উদ্ধার করা হয় নাই। কালকে আমাদের ক্রেন ট্রাক তুলতে চেয়েছিল তবে ট্রাক মালিক বলেছেন তারা তাদের ক্রেন দিয়ে ট্রাক তুলবে কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কাজ শুরু করে নাই।
ব্রিজ মেরামত ঠিকাদার শাহ জামাল বলেন, ট্রাকটি খাল থেকে তোলা গেলে আমরা আবার কাজ শুরু করতে পারব। আমরা এখন ট্রাকটি তোলার অপেক্ষায় বসে আছি।
পিরোজপুর সড়ক ও জনপদের বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী টিএম রাজিমুল আলীম রাজু বলেন, বেইলি ব্রিজটির ভাঙা ও পানিতে ডুবে থাকা প্লেট ও পাতগুলো সরানোর হয়েছে। তবে ট্রাকটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ট্রাকমালিক তাদের নিজস্ব ক্রেন দিয়ে ট্রাকটি তুলবেন। ট্রাকটি তোলা হলেই মেরামত কাজ শুরু করা যাবে। আশাকরি আনুমানিক এক সপ্তাহের মধ্যে ব্রিজটি মেরামত করা সম্ভব হবে।
প্রতিনিধি/এসএস

