সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতার অংশ হিসেবে দেশজুড়ে চলছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎপরতা।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) তারই অংশ হিসেবে ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক বিশেষ এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায়।
বিজ্ঞাপন
এই অভিযানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল ছদ্মবেশ। দুদকের সদস্যরা সাধারণ রোগী সেজে হাসপাতালে প্রবেশ করেন এবং সরাসরি সেবাপ্রাপ্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। এ সময় তারা সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে টিকিট বিক্রির প্রাথমিক প্রমাণ সংগ্রহ করেন।
অভিযানিক টিম জানায়, সরকার নির্ধারিত ৫ টাকার টিকিট ১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযানে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে এ অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।
শুধু টিকিট জালিয়াতিই নয়, হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদানে নানাবিধ অনিয়মের তথ্যও উঠে আসে।
ভর্তি থাকা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে অভিযানিক টিম জানতে পারে, চিকিৎসকরা সময়মতো উপস্থিত থাকেন না, প্রয়োজনীয় ওষুধ মিলছে না এবং নার্স ও কর্মচারীদের ব্যবহার নিয়েও অভিযোগ রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দুদক টিম ওয়ার্ড ও হাসপাতালের ওয়াশরুম ঘুরে দেখে, জায়গাগুলো অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় রোগীদের ভোগান্তির সীমা নেই। ওয়ার্ডে ছড়িয়ে থাকা বর্জ্য, নোংরা শৌচাগার ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে বলে স্থানীয়দের অভিমত।
স্টোর হাউজে পরিদর্শনের সময় ওষুধ বিতরণ সংক্রান্ত রেজিস্টারে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। মজুদ ও সরবরাহের মাঝে গরমিল পাওয়া যায়। এই বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন।
দুদক জানায়, অভিযানের সময় সরেজমিনে প্রাপ্ত সব তথ্য ও আলামতের ভিত্তিতে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে কমিশনের কাছে পাঠানো হবে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বলেন, জনগণের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হলে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতিকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যায় না। কমিশন এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
এমআই/এএইচ