সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মাগুরায় কোরবানির চামড়া নিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের বড় লোকসানের শঙ্কা

জেলা প্রতিনিধি, মাগুরা
প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

মাগুরায় কোরবানির চামড়া নিয়ে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের বড় লোকসানের শঙ্কা

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করে বিপাকে পড়েছেন মাগুরার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। বাজারে কাঙ্ক্ষিত দামে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে তারা বড় ধরনের লোকসানের মুখোমুখি হয়েছেন। লবণ সংকট, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি এবং মূলধন ঘাটতির কারণে ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত ব্যাংক ঋণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি কোরবানির ঈদে জেলায় ৬৬ হাজার ৯৭৮টি গরু জবাই হয়েছে। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চড়া দামে চামড়া কিনলেও বিক্রির সময় বাজারে মন্দাভাব এবং কম দামের কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


মাগুরা শহরের জামে মসজিদ রোডের মৌসুমি ব্যবসায়ী শাজাহান বলেন, ‘সরকার ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৫৫-৬০ টাকা এবং ঢাকার জন্য ৬০-৬৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। সে অনুযায়ী মাঝারি গরুর চামড়া থেকে আমাদের অন্তত ১ হাজার ২০০ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে আমরা মাত্র ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পেরেছি। ছাগলের চামড়াও মাত্র ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা ক্রয়মূল্যের চেয়ে অনেক কম।’

নান্দুয়ালী এলাকার ব্যবসায়ী ঝন্টু মিয়া বলেন, ‘প্রতি পিস ছাগলের চামড়া ৩০-৪০ টাকায় কিনেছি, কিন্তু কোনও পাইকার কিনতে রাজি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে চামড়া ফেলে দিতে হয়েছে। এনজিও থেকে নেওয়া ঋণ কীভাবে শোধ করব, বুঝে উঠতে পারছি না।’

পারলা এলাকার ব্যবসায়ী রাশেদ খান বলেন, ‘সরকার লবণযুক্ত চামড়ার ভিত্তিতে মূল্য নির্ধারণ করলেও, অধিকাংশ মৌসুমী ব্যবসায়ীর কাছে লবণের সঠিক ব্যবস্থা ছিল না। এ অবস্থায় নির্ধারিত দামে বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’

নতুন বাজার এলাকার ব্যবসায়ী ইউনুস আলী বলেন, ‘চামড়া সংগ্রহের মৌসুমে আমরা চরম মূলধন সংকটে পড়েছি। সরকার ট্যানারি মালিকদের জন্য ঋণ দিলেও আমাদের মতো মৌসুমী ব্যবসায়ীরা তাতে বঞ্চিত হচ্ছেন। উপরন্তু, লবণের ঘাটতি এবং সরকার কর্তৃক মসজিদ-মাদরাসায় লবণ বিতরণে আমরা উপেক্ষিত হয়েছি।’


বিজ্ঞাপন


ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে আগাম ধারণা না থাকা ও লবণের সঙ্কটের কারণে তারা চামড়া কিনে এখন চরম লোকসানে পড়েছেন। তাদের মতে, মৌসুমী ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারিভাবে ঋণ সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না হলে আগামীতে এ ব্যবসা হুমকির মুখে পড়বে।

এ প্রসঙ্গে সোনালী ব্যাংকের মাগুরা শাখার ব্যবস্থাপক দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ মঞ্জুরের বিষয়ে এখনো কোনও সরকারি নির্দেশনা আমরা পাইনি। ভবিষ্যতে নির্দেশনা এলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর