আগামী ৬ জুলাই লাল বেনারসি পরে বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল রিমঝিম বড়ুয়ার। স্বপ্নে আঁকা সংসার আর সানির সঙ্গে জীবনের নতুন পথচলার সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। কিন্তু তার আগেই সব স্বপ্ন থেমে গেল এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায়।
সোমবার (১৬ জুন) সকাল ৮টার দিকে কক্সবাজারের রামুর রশিদনগর এলাকায় বাস ও কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান রিমঝিম বড়ুয়া (২৪)। নিহত হন আরও দুইজন। আহত হয়েছেন অন্তত সাতজন।
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ভাণ্ডারগাঁওয়ের রাহুল মেম্বার বাড়ির ছেলে সানি বড়ুয়ার সঙ্গে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরের সম্পর্ক ছিল রিমঝিমের। সম্প্রতি তাদের বিয়ের দিন ধার্য করা হয় আগামী ৬ জুলাই। তার আগের দিন ছিল গায়েহলুদের আয়োজন। বিয়ের কার্ড ছাপানো, আত্মীয়-স্বজনদের আমন্ত্রণ জানানো—সবকিছুই চলছিল পুরোদমে।
রিমঝিম ছিলেন কক্সবাজারের রামু উপজেলার পূর্ব রাজারকুল গ্রামের হিমাংশু বড়ুয়ার মেয়ে। বিয়ের কেনাকাটা করতে সোমবার সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন বোনের সঙ্গে। পথে রশিদনগরে পৌঁছেই ঘটে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি, যা এক নিমিষে শেষ করে দেয় এক তরুণীর জীবন আর দুটি পরিবারের সুখস্বপ্ন।
হবু বধূকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন সানি বড়ুয়া। নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি লেখেন:
‘ভালো থেকো প্রিয়তমা।
নিয়তি হয়তো আমাদের আলাদা করে দিয়েছে, কিন্তু ভালোবাসা কখনো আলাদা হবে না।
লাল বেনারসি পরে আমার বাড়িতে আসার কথা ছিল তোমার, অথচ শেষ সময়ে পড়তে হলো সাদা কাফনের কাপড়।
একটা দিনও কথা না বলে কাটেনি সাড়ে তিন বছরের সম্পর্কে।
আজ তুমি কিভাবে চুপ করে চলে গেলে? আমি কীভাবে এই জীবন পার করব—একবারও ভেবে দেখলে না?’
বিজ্ঞাপন
সানির এই স্ট্যাটাসটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সহমর্মিতা প্রকাশ করছেন হাজারো মানুষ। সকলে রিমঝিমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছেন এবং এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করছেন।
রিমঝিমের এভাবে অকালে চলে যাওয়া কেবল একটি প্রেমের গল্পের সমাপ্তি নয়, এটি আরও একটি উদাহরণ—যেখানে আমাদের অব্যবস্থাপনার বলি হয়ে প্রতিদিন নিভে যাচ্ছে সম্ভাবনাময় কত তরুণ জীবন।
প্রতিনিধি/একেবি

