চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় পুলিশের ওপর ও মসজিদে হামলাসহ ত্রাস সৃষ্টির একটি মামলায় ইসকনের সাবেক সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১৬ জুন) মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ষষ্ঠ আদালতের বিচারক এস এম আলাউদ্দীন এ আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ৪ জুন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর জোনের সহকারী কমিশনার মোস্তফা কামাল চিন্ময়কে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত তাকে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। আগামী ২২ জুনের মধ্যে আদালত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
এজাহারে নাম না থাকলেও পুলিশের তদন্তে সম্পৃক্ততার তথ্য আসায় কারাবন্দী চিন্ময়কে এ মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছিল তদন্ত সংস্থা। আদালত তাকে গ্রেফতার দেখানোর অনুমতিও দেন। এর আগে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাসহ আরও চার মামলায় চিন্ময়কে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছিলেন আদালত।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোট নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে ত্রাস সৃষ্টি করে চিন্ময়ের অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে তারা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়।
নিহত আইনজীবী আলিফের ভাই খানে আলম গত বছর ২৯ নভেম্বর আইনজীবীদের ওপর হামলা, বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। আইনজীবী হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, গাড়ি ভাঙচুর, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালী থানায় মোট ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়। এরমধ্যে আইনজীবী খুনসহ পাঁচটি মামলায় চিন্ময়কে আদালতের নির্দেশে গ্রেফতার দেখানো হয়।
আইকে/এফএ

