মিরসরাইয়ে বালুবোঝাই পিকআপ ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একই পরিবারের আরও ২জন।
শনিবার (১৪ জুন) বিকেল ৩টায় বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কের চিনকীরহাট এলাকার আজমনগর স্কুলের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
নিহতরা হলেন, উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম বামনসুন্দর এলাকার বেলুবলী বাড়ির মৃত নুরুল করিমের ছেলে সাইফুল ইসলাম শাহিন (১৭), একই বাড়ির জিয়া উদ্দিন বাবলুর স্ত্রী সুমি আক্তার (৩০) ও ছেলে মানারুল (৩)। নিহত শাহিন পেশায় রাজমিস্ত্রীর সহকারী ছিল বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন, একই বাড়ির দোস মোহাম্মদের ছেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক জিয়া উদ্দিন বাবলু (৩০) ও মেয়ে তানিশা (৬)। তারা চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
![]()
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী আবু সাঈদ খোকন বলেন, চিনকীরহাট এলাকায় একটি বেপরোয়া গতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে সাইড দিতে গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং বালুবোঝাই পিকআপটি মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পিকআপটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে সড়কের পাশে উল্টে পড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, মহাসড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দেওয়া দরকার। তা না হলে সড়ক দুর্ঘটনায় অহরহ প্রাণ হারাবে।
বিজ্ঞাপন
নিহত সাইফুল ইসলাম শাহিনের বড় ভাই মো. রুবেল বলেন, শনিবার দুপুরে আমার চাচাতো জিয়া উদ্দিন বাবলু তার পরিবার নিয়ে নিজে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে করেরহাট ইউনিয়নের হাবিলদারবাসা এলাকায় তার শ্বশুর বাড়িতে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কের চিনকীরহাট এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে সাইড দিতে গিয়ে বাবলু তার গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবোঝাই পিকআপভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে আমার ভাই সাইফুল ইসলাম শাহিন মারা যায়। এছাড়াও আমার চাচাতো ভাই, তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে গুরুতর আহত হয়েছে।
আহত সিএনজিচালক জিয়া উদ্দিন বাবলুর ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সুমি আক্তার (৩০) ও ছেলে মানারুল (৩) চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টায় মারা গেছেন। তিনি আরও বলেন, আমার ভাই জিয়া উদ্দিন বাবলুর অবস্থা সংকটাপন্ন।
বারইয়ারহাট বিএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. আরিফ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম শাহিন (১৭) নামে এক কিশোর হাসপাতালে আনার আগেই মারা যায়। এছাড়া সুমি আক্তার ও মানারুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাকিন হোসেন বলেন, শনিবার দুপুরে বারইয়াহারট-খাগড়াছড়ি সড়কের চিনকিরহাট এলাকায় নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং বালুবোঝাই পিকআপের (চট্ট মেট্রো-ড ১১-২৭৫২) মুখোমুখি সংঘর্ষে শাহিন নামে এক সিএনজি যাত্রী নিহত হয়েছে। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া সিএনজিচালক জিয়া উদ্দিন বাবলু, তার স্ত্রী সুমি আক্তার, ছেলে মানারুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া তাদের চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমি আক্তার ও মানারুলের মৃত্যুর বিষয়ে এখনও কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মামলা করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস

