দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে বিএনপির সার্চ কমিটির নামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন, কমিটি গঠনের কাউন্সিলে পৌরসভার কর্মচারী ও স্বজনপ্রীতি, গঠনতন্ত্র অমান্য করে কমিটি গঠনের পায়তারাসহ নানান অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিক এবং সদস্য সচিব লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১৩ জুন) দুপুর পৌনে ১২টায় কুমারখালী রেলস্টেশন সংলগ্ন আব্দুর রশিদ সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতাকর্মীরা এমন অভিযোগ করেন। ব্যানার এবং সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির একাংশ।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শাতিল মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাফিজুর রহমান, সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও খোন্দকার সামসুউদ্দিনসহ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের হামলা, মামলা ও নির্যাতনের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেল সবাই। দলীয় কার্যক্রম গতিশীল ও দলকে সুসংগঠিত করতে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি নুরুল ইসলাম আনছারকে আহ্বায়ক এবং লুৎফর রহমানকে সদস্য সচিব করে তিন মাসের জন্য ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা কমিটি। তারা সম্পর্কে বিয়াই। উক্ত কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রথমে ওয়ার্ড কমিটি এবং পরে ইউনিয়ন কমিটি গঠন করবেন। সেই লক্ষ্যে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১১টি সার্চ কমিটি এবং একটি কাউন্সিল কমিটি গঠন করেছেন দুই বিয়াই। তবে এতে বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঢোকানো হয়েছে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছেন দুই বেয়াই।
তারা আরও বলেছেন, কমিটি করার লক্ষ্যে গঠিত কাউন্সিল কমিটিতে আহ্বায়কের শ্যালক রাজু আহমেদ বিপ্লবকে প্রধান করা হয়েছে। যিনি কুমারখালী পৌরসভার উচ্চমান হিসাবরক্ষক। এছাড়াও এই কমিটিতে পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক মনিরুজ্জামান টুটুল এবং কর্মচারী সাইদুল ইসলামকে সদস্য করা হয়েছে। যারা আওয়ামী লীগের দোসর।
বিজ্ঞাপন

দুই বেয়াই মিলেমিশে কুমারখালীর বিএনপিকে বিয়াই অ্যান্ড বিয়াই কোম্পানিতে পরিণত করেছেন উল্লেখ করে বক্তারা বলেছেন, দলীয় কোনো কার্যক্রমে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কমিটির অন্য নেতাকর্মীদের ডাকেন না। নিজেরাই তাদের আত্মীয় স্বজন ও পৌরসভার কর্মচারী দিয়ে পকেট কমিটি গঠন করে বেড়াচ্ছে। এ সব বিষয়ে জেলা কমিটিতে লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়েছে। দ্রুত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি, সার্চ কমিটিসহ সব কমিটি বাতিলের দাবি জানান তারা। না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
তবে সংবাদ সম্মেলনের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব লুৎফর রহমান। তিনি ফোনে বলেন, আহ্বায়ক আমার বেয়াই হয়। অভিযোগ করা নেতাদের অনুষ্ঠানে ডাকলেও তারা আসেন না। এখন মনগড়া অভিযোগ করছেন। সন্ধ্যায় অফিসে আসেন বিস্তারিত বলা হবে।
সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি জানেন না জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন। তিনি বলেন, একটি অনুষ্ঠানে আছি। পরে বলা যাবে বিস্তারিত।
ক্যাপশন ঃ ব্যানার ছাড়াই কুমারখালীতে বিএনপির একাংশের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত। ছবি শুক্রবার দুপুরে আব্দুর রশিদ সুপার মার্কেটে।
প্রতিনিধি/এসএস

