সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে যাদুকাটা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৯ জুন) সকালে এলাকাবাসীর উদ্যোগে সেতুর পশ্চিম প্রান্তে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, সমাজসেবক, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, চাকরিজীবীসহ এলাকার শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
বিজ্ঞাপন
ঘাগটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পবিত্র কুমার রায়ের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সমাজকর্মী ও লেখক মো. আবুল হোসেন, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা, গণকল্যাণ ফাউন্ডেশনের কর্মী সারোয়ার হোসেন, তাহিরপুর ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সদস্য নূর উদ্দিন, ডা. রামচন্দ্র রায়, সমাজকর্মী মাওলানা দেলোয়ার, চিকিৎসাসেবা ফাউন্ডেশনের সদস্য নাজমুল ইসলাম, হাকিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান কাউসার, মুফতি নেছার আহমেদ, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, যাদুকাটা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি ভাটি অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সেতু। সেতুর কাজ দ্রুত শেষ হলে এ অঞ্চলের মানুষের বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে। তাহিরপুর, মধ্যনগর, ধর্মপাশা ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার লাখো মানুষ কম খরচে এবং কম সময়ে যাতায়াত করতে পারবেন। পাশাপাশি পর্যটকরাও সহজে যাতায়াত করতে পারবেন।
তারা আরও বলেন, প্রায় সাত বছর আগে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল, যা তিন বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রায় এক বছর ধরে কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এলাকাবাসী জানতে চায়, কেন এ কাজ বন্ধ রয়েছে, কাদের স্বার্থে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বক্তারা যোগাযোগ উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বলেন, অতি দ্রুত যাদুকাটা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করুন; অন্যথায় এলাকাবাসী বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে।
বিজ্ঞাপন
২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত যাদুকাটা নদীর ওপর ৭৫০ মিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় মেসার্স তমা কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শুরুতে প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত গতিতে কাজ করলেও ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর অদৃশ্য ইশারায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৮ টাকা। চার দফায় সময় বাড়ানোর পরও নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৭৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ৬৪ কোটি ৯৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করেছে, যা বরাদ্দের ৭৮ শতাংশ। অর্থাৎ, কাজের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১ কোটি টাকা বেশি বিল উত্তোলন করেছে।
সেতুর মোট ১৫টি স্প্যানের মধ্যে ১২টি এবং ৭৫টি গার্ডারের মধ্যে ৬০টির কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ২০টি গার্ডার ও ৩টি স্প্যানের কাজ বাকি রয়েছে।
প্রতিনিধি/একেবি