বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫, ঢাকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে টানা ছুটিতে আম বিক্রি নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

জেলা প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯ জুন ২০২৫, ০১:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে টানা ছুটিতে আম বিক্রি নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে টানা ছুটির কারণে আম বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বাগানি ও ব্যবসায়ীরা। ফলন ভাল হলেও ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো যাচ্ছে না আম। বন্ধ কুরিয়ার সার্ভিসও। তাই স্থানীয় বাজারেও পড়ে গেছে দাম।প্রতি মণ আমের দাম কমেছে প্রায়  ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা।

mango_1


বিজ্ঞাপন


আম পরিবহণ ও বাজারজাতের অন্যতম ব্যবস্থা কুরিয়ার সার্ভিস। ঈদ উপলক্ষ্যে ৫ জুন থেকে ৮ জুন সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ। ৪ জুন থেকে বন্ধ হয়ে যায় আমের বুকিং নেওয়া। এতে থমকে গেছে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো আমের বিশাল অনলাইন মার্কেটিং।

দেশের অন্যতম বৃহৎ আমের বাজার কনসার্টে গিয়ে দেখা গেছে, আগের দিনের সঙ্গে দামের বেশ ফারাক রয়েছে। একদিকে ছুটি, আরেকদিকে আম পেকে ঝরে পড়ার আশঙ্কা- দুইয়ে মিলে ভাবাচ্ছে আম চাষিদের।

mango_2

চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, এ বছর আম পাড়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় বাধা নেই; অর্থাৎ প্রতিবারের মত ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ নেই। চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাধারণত মে মাসের শেষে অথবা জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে গাছে পাকা আম দেখতে পাওয়া যায়। গাছে পাকা আম দেখা দিলে পরিপক্ক ওই আম বাজারে নামান চাষি ও ব্যবসায়ীরা।


বিজ্ঞাপন


mango_3

আম ব্যবসায়ী শামিম আলী  বলেন, ৩০ মে আম নামে বাজারে। ১ জুন থেকে কানসাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিতরে আম বাজার জমে ওঠে। শুরুতে বাজারে উঠে গোপালভোগ আম। বাজার দর ১৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা। এদিন ক্ষীরশাপাত আমও আসে বাজারে। শুরুতেই ক্ষীরশাপাত আম প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছিল ২০০০ টাকার উপরে। দুদিন পর ৩ জুন বিক্রি হয় ২২০০ থেকে ২৭০০ টাকা মণ দরে। কোরবানির ঈদমুখী ব্যস্ততা ও অফিস-আদালতের দীর্ঘ ছুটির প্রভাবে আমের দাম কমে যায়। ৪ জুন বাজারে ক্ষীরশাপাত আম ১৬০০ থেকে ২৪০০ টাকা মণ এবং ল্যাংড়া আম প্রতি মণ ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

mango_6

সদর উপজেলা থেকে আম বিক্রি করতে এসেছেন কানসাট বাজারে তারেক আলী  তিনি জানান, ৩ জুন ক্ষীরশাপাত  কিছুটা ছোট আকারের বিক্রি করেছেন ১৬০০ থেকে ২২০০ টাকা মণ। ৪ জুন (বুধবার) দুপুরে একজন দাম বলেছেন। 

বাজারে অনেক  কাস্টমার কম। বাজার স্বাভাবিক না হলে গাছের আম গাছেই পেকে নষ্ট হবে।

mango_4

বরিশাল জেলা শহরের থেকে আম কিনতে এসেছেন সুমন শেখ । তিনি বরিশাল সহ দেশের বিভিন্ন এলাকার অনলাইনে আম মার্কেটিং শুরু করছেন। তিনি জানান, গেল দুই-তিন দিন অনলাইনে অর্ডার নিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসে ভোক্তার কাছে আম পাঠিয়েছেন। ঈদ উপলক্ষ্যে কুরিয়ার সার্ভিস বন্ধ। তাই নতুন করে আর অর্ডার নিতে পারেননি।

কনসার্ট বাজারের আমের আড়তদার মো. মজিবুর রহমান সরকার জানান, ৪ জুন থেকে আমের দর কম। কোরবানি ঈদের ব্যস্ততায় বাইরের ব্যাপারীরা নেই; বিক্রি কমে গেছে।

mango_7

আম উদ্যোক্তা ও শিবগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল হক হায়দারী বলেন, আমের তো ছুটি হয় না; সময় হলে পেকে ঝরে পড়বে। আম, কৃষিপণ্য, কাঁচামাল পরিবহনে ঈদের ছুটিতেও ডাক বিভাগের জরুরি পরিষেবার আওতার বিশেষ ব্যবস্থা চালু রাখা দরকার।

mango_5

কনসার্ট বাজারের ইজারাদার শফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা কম, বেচা- বিক্রি কম হচ্ছে। ঈদের আগে দু-দিন এবং ঈদের পরে দু-দিন এই চার-পাঁচ দিন পরে আবার বাজার ঠিক হয়ে যাবে।

কনসার্ট বাজার এলাকার গোপালনগর মোড় সহ  বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ জুন থেকে ৮ জুন কুরিয়ার সার্ভিস বন্ধ থাকবে। ৯ জুন থেকে বুকিং শুরু হবে।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর