কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার আড়ত নাটোরে সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে আড়তগুলোতে রং ও মেরামত কাজ চলছে। এবার বৃহত্তম এই আড়তে ১১ থেকে ১২ লাখ পিস চামড়া বেচাকেনা হবে বলে জানিয়েছেন চামড়া ব্যবসায়ী নেতারা। যার মূল্য আনুমানিক প্রায় ৫০ কোটি টাকা। তবে এবার নানা কারণে কোরবানির সংখ্যা কমে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
প্রতি বছর কোরবানির ঈদে উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলের ২৫ থেকে ৩০টি জেলার কাঁচা চামড়া নাটোরের চকবৈদ্যনাথ আসে। এখানে ৬০-৭০টি আড়তে চামড়া বেচাকেনা হয়। ঈদের দিন বিকেল থেকে আশপাশের জেলা ও উপজেলা থেকে আসতে শুরু করে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া। এরপর আড়তগুলো চলে চামড়া লবণজাতের প্রক্রিয়া। এ কাজের সঙ্গে কয়েক হাজার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। নাটোরের আড়তে এবার গরুর চামড়া তিন লাখ পিস, খাসির চামড়া সাত লাখ পিস, মহিষের চামড়া ১০ হাজার পিস, ভেড়ার ২০-৩০ হাজার পিস লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার বাহিরে প্রতি বর্গফিট গরুর চামড়া ৫০-৫৫ টাকা, ছাগল ২০-২২ টাকা এবং খাসির চামড়া ২৫-২৭ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।
বিজ্ঞাপন
চামড়া ব্যবসায়ী নান্নু বলেন, গত ১৫ দিন আগে লবণের দাম ছিল ৭২০ টাকা। সেই লবণ বেড়ে এখন এক হাজার টাকা হয়েছে। ফলে একটি বড় চামড়ায় একশ' টাকার লবণ বেশি পড়বে। যার কারণে চামড়ায় দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।
আরেক ব্যবসায়ী ইসমাঈল হোসেন বলেন, ৪০ বছর ধরে চামড়ার ব্যবসার সঙ্গে রয়েছি। এ বছর চামড়ার আমদানি কম হবে। কারণ দেশে এবার কোরবানির সংখ্যা কম হবে। চামড়া পাচারের কোনো আশঙ্কা দেখছি না। কারণ অন্য বছরের তুলনায় এ বছর চামড়ার সংখ্যা কম হবে বলে ধারণা তার।
ব্যবসায়ী রকিব উদ্দিন কমল বলেন, এবার কোরবানি কম হওয়ার কারণে চামড়া কম আমদানির আশঙ্কা করছি। চামড়ায় লেমপিন রোগের এবার আশঙ্কা বেশি। এ রোগে আক্রান্ত গরুর চামড়া কেউ কিনতে চায় না। ফলে চামড়া পানির দামে বিক্রি করতে হয়।
বিজ্ঞাপন
নাটোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম সিদ্দিকী ঢাকা মেইলকে বলেন, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কাঁচা চামড়া বাজার নাটোর। এখানে প্রতি বছর ২৫-৩০ জেলার চামড়া কোরবানিতে আসে। এ বছর জেলায় ১০ থেকে ১২ লাখ পশুর চামড়া বেচাকেনা হবে। আনুমানিক প্রায় ৫০ কোটি টাকার চামড়া বিক্রির আশা করছি। চামড়া সংরক্ষণে ব্যবসায়ীরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সীমান্ত এলাকা দিয়ে যেন চামড়া পাচার না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান করছি।
প্রতিনিধি/জেবি