আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রংপুরের বাজারে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। বিশেষ করে এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ ও গোলমরিচের মতো পণ্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। ভোক্তারা বলছেন, বাজার মনিটরিংয়ের অভাব এবং ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণেই এই পরিস্থিতি।
বুধবার (৪ জুন) সরেজমিনে রংপুর মহানগরীর সিটি বাজার, নবাবগঞ্জ বাজার ও ধাপ সিটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের মসলার দাম চড়া। পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা পর্যায়েও ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
বিজ্ঞাপন
খুচরা বাজারে মানভেদে এক কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায়। পাইকারি দরে ভালোমানের এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ টাকা এবং নিম্নমানেরটি ৩ হাজার ৬০০ টাকা। এর প্রভাব খুচরা দামে পড়ে কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে।
একইভাবে, প্রতি কেজি দারুচিনি খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়, যা কিছুদিন আগেও ছিল ৪৮০ টাকা। গত বছর এই দাম ছিল মাত্র ৪০০ টাকা। লবঙ্গের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯০০ টাকায়; পাইকারিতে এর দাম ১ হাজার ৫০০ টাকা। গোলমরিচের দামও বেড়ে এখন খুচরা বাজারে ১ হাজার ৪৫৯ টাকা, যেখানে এক মাস আগেও ছিল ৭৫০–৮০০ টাকা।
তবে কিছুটা স্বস্তির খবর, জিরার দাম তুলনামূলকভাবে কমেছে। বর্তমানে খুচরায় প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৭০০–৭৫০ টাকায় এবং পাইকারিতে ৬০০–৭০০ টাকায়।
পিয়াজ, আদা ও রসুনের দামে তেমন বড় পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০–৬০ টাকায়, আমদানিকৃত রসুন ও আদা যথাক্রমে ২০০ ও ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগের ঈদগুলোর তুলনায় কিছুটা কম।
বিজ্ঞাপন
মসলা কিনতে আসা ভোক্তা এম এইচ মানিক বলেন, ‘ঈদ এলেই মসলার দাম বেড়ে যায়। বিষয়টি আগেভাগে নজরদারির মাধ্যমে ঠেকানো সম্ভব হতো। শেষ মুহূর্তে অভিযান চালিয়ে তেমন সুফল মেলে না।’
আরেক ভোক্তা শাহীল ফারহান বলেন, ‘নিয়মিত বাজার তদারকি না থাকার পাশাপাশি সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছে। সরকারের উচিত নিয়মিত মনিটরিং ও সিন্ডিকেট ভেঙে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা।’
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম না বাড়লে তারা দাম বাড়াতেন না। মেসার্স সাদেক স্টোরের স্বত্বাধিকারী সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘পাইকারিতে মসলার দাম বাড়ায় খুচরা পর্যায়েও আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে। এতে আমাদের কিছুই করার নেই।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের রংপুরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে আমরা নিয়মিত বাজার মনিটর করছি। যাতে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত দামে পণ্য না বিক্রি করতে পারে, সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে।’
প্রতিনিধি/একেবি

