হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন এলাকা থেকে কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা মো. ওমর ফারুক লিটনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২ জুন) সকালে কাতার থেকে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকিংয়ে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে ইমিগ্রেশন পুলিশ বিষয়টি কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় অবহিত করলে সন্ধ্যায় পুলিশের একটি দল বিমানবন্দরে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে এবং রাত ১২টা নাগাত কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় নিয়ে আসে। পরে সকালে তাকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার হওয়া ওমর ফারুক লিটন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে।
তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত। তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জে ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলা, গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা রয়েছে, যাতে তিনি ১ নম্বর আসামি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখ দুপুর দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে কিশোরগঞ্জ শহরের গৌরাঙ্গ বাজার মোড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। বাদী আফসানা আক্তার মীম, যিনি নিজেও আন্দোলনের অংশ ছিলেন, মামলায় উল্লেখ করেন—আওয়ামী লীগ নেতা ওমর ফারুক লিটনের নেতৃত্বে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জন অস্ত্রধারী হামলা চালায়। তারা নিজেদের ‘শেখ হাসিনার সৈনিক’, ‘মুজিব সেনা’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে মিছিল ভাঙার উদ্দেশ্যে হামলা করে।
হামলার সময় আসামিরা বন্দুক, দেশীয় অস্ত্র এবং ককটেল ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। এসময় বাদীর বাবা ইদ্রিস মিয়া, যিনি মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তার শরীরে ৩৭টি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়, যার মধ্যে ১৬টি এখনো শরীরেই রয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বাদী জানান, তার পিতা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিজ্ঞাপন
এজাহারে নাম উল্লেখ করা ৯ জন আসামির মধ্যে ওমর ফারুক লিটন ছাড়াও রয়েছেন—চন্দন বর্মন, জহিরুল ইসলাম সুমন, চপল বর্মন, জয়নাল, মিলন মিয়া, বাক্কার মেম্বার, মানিক মিয়া এবং যুবলীগ নেতা ফারুক ভূঁইয়া। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০–২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় দণ্ডবিধির ১৪৩/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩৪ ধারা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩/৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের বার্তার প্রেক্ষিতে আমরা পিসি বিয়ার চেক করে দেখি তার নামে একটি মামলা রয়েছে। পরে আমাদের একটি টিম দিয়ে রাতে তাকে নিয়ে আসে। গ্রেফতার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিনিধি/ এজে

