সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ১৭ দিন ‘গুম নাটক’, কক্সবাজারে উদ্ধার যুবক

আলমগীর হোসেন, জামালপুর 
প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২৫, ১১:০৬ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ১৭ দিন ‘গুম নাটক’, কক্সবাজারে উদ্ধার যুবক

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের গুমের নাটক সাজিয়ে ১৭ দিন আত্মগোপনে ছিলেন জামালপুরের এক যুবক। পুলিশের তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় বুধবার কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার একটি মসজিদ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ৩২ বছর বয়সী স্বপন মোল্লা জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা। প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে নির্মাণ সামগ্রী ভাড়ার বিষয়ে বিরোধের জেরে এমন ঘটনা ঘটে।

পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার (২৮ মে) রাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার একটি মসজিদ থেকে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। নিখোঁজের পেছনে থাকা রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের এই সাফল্যে এলাকাবাসী স্বস্তি পেয়েছে।


বিজ্ঞাপন


পুলিশ ও পরিবার সূত্র জানায়, ১০ মে বিকেলে স্বপন ও সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আলী বাবুর মধ্যে নির্মাণ সামগ্রী ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। পরে স্থানীয়রা আপোষে মীমাংসা করতে চাইলেও স্বপন রাজি হননি।

পরদিন রাত ১২টার দিকে স্বপন নিজের ব্যবহৃত ছেঁড়া শার্ট, জুতো ও মোটরসাইকেল বলারদিয়ার মাধুর মোড়ের কাছে ফেলে দিয়ে আত্মগোপনে যান। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। ১১ মে স্বপনের বাবা জসিম উদ্দিন মোল্লা সরিষাবাড়ী থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

সরিষাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল আলম টিপু বলেন, ‘মোটরসাইকেল, ছেঁড়া শার্ট ও জুতো পড়ে থাকার সংবাদে নিখোঁজ ডায়েরি নেয়া হয়। এরপর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বপনের অবস্থান খুঁজতে শুরু করা হয়।’

২২ মে হঠাৎ স্বপনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে তার পরিবারকে ফোন আসে, যেখানে সে ‘বিপদে আছি, দ্রুত ২ লাখ টাকা পাঠাও’ বলে জানান। এরপর পুলিশ মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া এলাকায় তার অবস্থান নির্ধারণ করে।


বিজ্ঞাপন


উখিয়া থানার সহযোগিতায় উখিয়ার এক মসজিদ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে স্বপন স্বীকার করেন, ‘প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্যই গুম নাটক সাজিয়েছি।’

সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান বলেন, ‘স্বপনের সঙ্গে প্রতিপক্ষের ঝগড়ার কারণে সে নিজেই এই নাটক রচনা করেছে। মোবাইল ফোন চালু হওয়ায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।’

POLICE

ওসি আরও জানান, হয়রানির অভিযোগ না থাকায় তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

পুলিশের দ্রুত ও তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর তদন্তে এলাকার মানুষ নিরাপদ বোধ করছে এবং পুলিশের পেশাদারিত্ব প্রশংসিত হচ্ছে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর