রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের শঙ্কা

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম

শেয়ার করুন:

K
খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের শঙ্কা। ছবি- প্রতিনিধি

পাহাড় ধসের শঙ্কায় খাগড়াছড়ির মানুষ। টানা ভারী বৃষ্টিতে ইতিমধ্যে ছোট পাহাড় ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে চেঙ্গী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন নদীর পাড়ের মানুষরা। 

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলায় ৩৫ হাজার পরিবার ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। আর খাগড়াছড়ি পৌরসভায় ৩০টি স্থানে বসবাস করছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার। 


বিজ্ঞাপন


সদরের শালবন, কদমতলী, কুমিল্লাটিলা, মোল্লাপাড়া, কলাবাগান, নেন্সিবাজার, কৈবল্যপিঠ, সবুজবাগ এলাকায় স্থানীয়রা পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। এছাড়া জেলার দীঘিনালা, মাটিরাঙা, মহালছড়ি, রামগড়, লক্ষীছড়ি, মানিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে স্থানীয়রা।

K

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফিন্সের স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, বৃষ্টি হলে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা বেশি থাকে। পাহাড় ধস হলে জানমালের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছি এবং নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে বলেছি। 

জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় ভারী বর্ষণে পাহাড় ও ভূমিধস প্রবণ এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে ৷ পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী স্থানে অবস্থানকারী নাগরিকদের নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। 


বিজ্ঞাপন


ভারী বর্ষণের আগেই এসব বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়া না হলে বড় প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকরা।
 
বেআইনিভাবে পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করায় বেড়েছে ঝুঁকি। বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণে জানমালের ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বসবাসকারীদের সরিয়ে দিতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন।

K3

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আমরা পাহাড়ের পাদদেশে বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছি। এখন সরকারি উদ্যোগে যদি পাকা দেয়াল দেওয়া হয়, তাহলে আমরা নিরাপদে বসবাস করতে পারব। আমাদেরকে যদি অন্য কোথাও পুনর্বাসন করা হয়, তাহলে আমরা সেখানে চলে যাব।

সদরের গোলাবাড়ি এলাকায় তিন বছর আগে বড় পাহাড় ধসে পড়ে মিতিলা মারমা ঘরের উপর। ঝুঁকি নিয়ে তিনি এখনো বসবাস করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মিতিলা জানান, পাহাড় ধসে পড়েছে তিন বছর হয়েছে। গত বছর এক পরিবার চলে গেছে। আমাদের আর জায়গা নেই, নিরুপাই হয়ে ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করতে হচ্ছে।  

পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও এটি রোধে নেই কোনো স্থায়ী ঠেকসই ব্যবস্থাপনা বা পরিকল্পনা। ফলে প্রতিবছরই পাহাড় ধসে ক্ষতি বাড়ছে। পাহাড় কেটে পাদদেশে কিংবা পাহাড়ের উপর বসবাসরতদের বেশিরভাগই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ। বিকল্প উপায় না পেয়ে বছরের পর বছর তারা এখানে বসবাস করছে। 

অনেকটা মৃত্যু ঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে এখানে বসবাস করছে এসব মানুষ। ভারী বর্ষা এলে আতঙ্ক বাড়ে তাদের মাঝে।

এএইচ 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর