সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

রাউজানে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার তরুণ, নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২৫, ১০:৩৫ এএম

শেয়ার করুন:

রাউজানে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার তরুণ, নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার

চট্টগ্রামের রাউজানে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিত স্থানীয়রা। একের পর এক ভয়ভীতি, শারীরিক নির্যাতন ও চাঁদাবাজির শিকার হয়েছেন মো. আব্দুল্লাহ রিমন (২১) নামের এক তরুণ। তার পরিবার জানিয়েছে, বারবার প্রাণনাশের হুমকিতে তারা এখন ঘর থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন রিমনের বড় বোন রুশমি আক্তার, যিনি চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী। অভিযোগে তিনি জানান, গত মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তার ভাইকে দু’বার শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে এবং প্রতিবারই তাকে জোর করে অর্থ দাবি ও হুমকি দেওয়া হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রিমনের সঙ্গে একই এলাকার এক কিশোরীর পূর্বপরিচয় ছিল। এ সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ৩ মার্চ সকাল ১১টার দিকে অলিমিয়া হাট এলাকার একটি স্কুলের সড়কে রিমনের সঙ্গে মেয়েটির দেখা হয়। সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার পরপরই, আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা একদল কিশোর রিমনকে ঘিরে ধরে।

তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি মাদরাসার ভেতরের একটি খালি কক্ষে। সেখানে তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয় এবং তার কাছে ২৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। একইসঙ্গে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়।

পরবর্তীতে কিশোর গ্যাং সদস্যরা রিমনের বোনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেয়। সেখানে রুশমিকে হুমকি দেওয়া হয়, অপমান করা হয় এবং তার কাছ থেকেও জোরপূর্বক এক হাজার টাকা আদায় করা হয়।

পরিবারের অভিযোগ, এ সময় তাদের কাছ থেকে জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর আদায় করা হয়। এরপর ৫ মার্চ রিমনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তার চিকিৎসার সময় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি কেস ফাইল করা হয়।


বিজ্ঞাপন


ঘটনার কিছুদিন পর অভিযুক্তরা স্থানীয় একজন নেতার মাধ্যমে রিমনের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চান এবং মোবাইলটি ফেরত দেন। মানবিক কারণে পরিবারটি আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি কিশোর গ্যাং। অভিযোগ অনুযায়ী, ২১ মে রাতে রিমন অলিমিয়াহাট বাজারে গেলে পুনরায় তার উপর হামলা চালানো হয়। তাকে আবারও একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। একপর্যায়ে জোর করে একটি ভিডিও রেকর্ড করা হয়, যাতে সে পূর্বের ঘটনাগুলোর দায় স্বীকার করে নেয়।

রিমনের চিৎকারে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি এগিয়ে এলে গ্যাং সদস্যরা দ্রুত পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা হুমকি দিয়ে যায়—ঘটনার ব্যাপারে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হলে রিমনকে হত্যা করা হবে এবং তার বড় ভাই বিদেশ থেকে দেশে ফিরলে তাকেও রেহাই দেওয়া হবে না।

থানায় দেওয়া অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হলেন— মো. মারুফ, মো. ফাহিম, মো. রাকিবুল ইসলাম, মো. তারেক, মো. সায়েক এবং গ্যাং পরিচালনাকারী মো. রাশেদ ওরফে জাসসো।

রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর