সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সরকারের সংস্কারে একটি গোষ্ঠীর গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়েছে: হান্নান 

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী
প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম

শেয়ার করুন:

NCP
এনসিপির নোয়াখালী জেলা শাখার অনুষ্ঠানে হান্নান মাসউদ। ছবি- প্রতিনিধি

সরকার যখন এনবিআর, বন্দর, সচিবালয় ও ভারত থেকে ২১ বিলিয়নের অস্ত্র চুক্তি বাতিলসহ সংস্কারে হাত দিয়েছে, তখনই একটি গোষ্ঠীর গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। 

মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে এনসিপির নোয়াখালী জেলা শাখার আয়োজনে সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল, দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ এবং সমন্বয় কমিটি গঠনের উদ্দেশে নোয়াখালী জেলা এনসিপির সকল সংগঠকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। 


বিজ্ঞাপন


হান্নান মাসউদ বলেন, ‘সরকারি চাকরীজীবীদের দুর্নীতি বন্ধে যখনই ‘দুর্নীতিগ্রস্তদের সরকার চাইলে চাকরিচ্যুত করতে পারবে’- এমন পদক্ষেপ নিয়েছে, তখনই ফ্যাসিবাদী আমলা চক্র সরকারের বিরুদ্ধে নেমেছে। যুগ পরিবর্তনের জন্য এক হাজার ব্যক্তির প্রয়োজন নেই, বিপ্লবী নেতৃত্বের কয়েকজনই যথেষ্ট।’ 

ভারতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের বারবার চোখ রাঙানি দিচ্ছে। শেখ হাসিনার আমলে ভারত আমাদের দেশের শিল্প খাত, চিকিৎসা খাত, কৃষি খাত তাদের কাজে ব্যববহার করেছে। ভারত থেকে অস্ত্র কিনতে বাধ্য করা হয়েছিল। মিলিটারি শক্তিকে দায়বদ্ধ করা হয়েছিল। তাদের পুরানো ট্যাংক, হেলিকপ্টার যেগুলো তারা ব্যবহার করতে পারত না, সেগুলো বাংলাদেশের কাছে জোরপূর্বক বিক্রি করতো ভারত।’

হান্নান বলেন, ‘ড. ইউনূসের সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য  ভারত থেকে মিলিটারিদের জন্য অস্ত্র কেনার ২১ বিলিয়নের চুক্তি বাতিল করেছে। এই চুক্তি বাতিল করা হয়েছিল ড. খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে। তারপর থেকে একটি গোষ্ঠীর গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়েছে। তারা মানুষকে বোঝাতে চাচ্ছে, ভারত থেকে অস্ত্র না কিনলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা মনে করছে, বাংলাদেশের মানুষ এখনো বোকার স্বর্গে বসবাস করছে।’

NCP2


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, ‘আমাদের লড়াই হলে ভারতের সঙ্গে হবে। আমরা যদি ভারত থেকে অস্ত্র কিনি, তাহলে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী তাদের সঙ্গে কখনো সেই অস্ত্র দিয়ে লড়াই করতে পারবে না। আজকের রাজনৈতিক বিভিন্ন দল এবং মিলিটারি শক্তিসহ অনেকে আজ ঐক্যবদ্ধ দিল্লির সেই দাসত্ব নাকে খত দিয়ে মেনে নেওয়ার জন্য।’ 

বন্দর ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন নিয়ে হান্নান বলেন, ‘সাইফ পাওয়ারটেকসহ দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের সমুদ্র বন্দর দখল করে রেখেছে আওয়ামী এক ফ্যাসিবাদী শক্তি। যারা দীর্ঘ সময় থেকে আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরের এক-চতুর্থাংশ দখল করে রেখেছে। এই দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। যখন আমরা বলছি আমাদের বন্দর ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন দরকার, আধুনিক নিয়ম-নীতি দরকার, এমন একটি কোম্পানির মাধ্যমে বন্দর ব্যবস্থাপনা দরকার যার ফলে বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সমুদ্র বন্দরে রূপ নেবে আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর, ঠিক তখনই একটি শ্রেণির গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়েছে। তারা কি ভুলে গেছে সাইফ পাওয়ারটেকের ইতিহাস?  এদেশের হাজার হাজার কোটি টাকার লুটপাটের ইতিহাস? তারা আসলে কাদেরকে সুবিধা দিতে চাচ্ছে? আমরা সেটা প্রশ্ন রেখে গেলাম।’

এনসিপি নোয়াখালী জোনের তত্ত্বাবধায়ক মুনতাসির মাহমুদের সভাপতিত্বে ও হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রস্তুতি সভার উদ্বোধন ঘোষণা করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর মা ফরিদা ইয়াসমিন। 

এসময় কেন্দ্রীয় দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর, যুগ্ম সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, কেন্দ্রীয় সদস্য তুহিন ইমরান, নোয়াখালীর সংগঠক ইয়াছিন আরাফাতসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর