দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হওয়ার পরও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকা ও বাজারে ক্রেতা না থাকায় ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না কৃষক। বাজারে দাম না থাকায় পাকা ভুট্টা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৬ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ আবাদ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি খরিপ-১ মৌসুমে ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১,০৪৫ হেক্টর জমিতে। এবার গড়ে প্রতি বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে ফলন হয়েছে ৩৭.৫ মণ, যা প্রতি হেক্টরে প্রায় ১১.৫ কোটি টন। অনেক জমিতে ৪০ থেকে ৪২ মণ পর্যন্ত ফলন মিলেছে।
বিজ্ঞাপন
সরকার ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ করেছে। রোগবালাই কম এবং উৎপাদন খরচ তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় ভুট্টা চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ে এ অঞ্চলের কৃষকদের। তবে যে তুলনায় ভুট্টা আবাদ ও ফলন হয়েছে সে তুলনায় বাজারে ভুট্টার দাম অনেক কম।
![]()
বোচাগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা সময়মতো ভুট্টা ঘরে তুললেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারা ভুট্টা ভাঙাতে পারছে না। এছাড়াও বাজারে ভুট্টার দাম ও ক্রেতা না থাকায় ভুট্টা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে হাজার হাজার কৃষক।
বর্তমানে প্রতিমণ কাঁচা ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে, আর শুকনা ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে।
বিজ্ঞাপন
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ জমির গাছে ভুট্টার পাকা মোচা ঝুলছে। গত কয়েকদিনে একটানা বর্ষণের কারণে কৃষকরা জমিতে থাকা ভুট্টা ঘরে তুলতে পারছে না। আবার কেউ কেউ পাকা ভুট্টা ঘরে তুললেও ক্রেতার অভাবে ভুট্টা ভাঙাতে পারছে না। ভুট্টা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
আরও পড়ুন
আটগাঁও গ্রামের কৃষক লাইসুর রহমান জানান, এক একর জমিতে বোরো ধানের পরিবর্তে ভুট্টা চাষ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ভুট্টা শুকাতে পারছি না। এদিকে বাজারে ক্রেতা না থাকায় দিন দিন ভুট্টার দাম কমছে। সময়মতো ভুট্টা বিক্রি করতে না পারলে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
একই গ্রামের কৃষক শরিফুল জানান, আমি ২ বিঘা ভুট্টা চাষ করেছি। আশানুরূপ ফলন হলেও ভালো দাম পাচ্ছি না। এমনি অভিযোগ শত শত ভুট্টা চাষিদের। অনেক আশা করে ভুট্টা লাগালেও বর্তমান বাজারে দাম না থাকায় হতাশ তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নয়ন কুমার সাহা বলেন, ভুট্টা স্বল্প খরচে অধিক উৎপাদনকারী একটি লাভজনক ফসল। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে, গড় ফলন বিঘাপ্রতি ৩৭.৫ মণ। আমরা আশা করছি ফলন ও বাজারদর দুটোই ভালো থাকবে। তবে কিছুদিন ধরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষকরা ভুট্টা ঘরে তুলতে পারছে না।
প্রতিনিধি/এসএস

