রাজশাহীর বাগমারায় ছুরিকাঘাতে একজনকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত আসামিকে আটক করে পুলিশ। তবে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আটক আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বুধবার (২১ মে) ভোররাতের দিকে চট্টগ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। দুপুরে র্যাব-৫ রাজশাহীর উপ-অধিনায়ক মেজর আসিফ আল-রাজেক ঢাকা মেইলকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার আসামিরা হলেন- মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে খোরশেদ আলম (৪৫) এবং আলম উদ্দিনের ছেলে ভুট্টু প্রামানিক (৪২)। তাদের দু’জনেরই বাসা নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গোয়ালবাড়ি এলাকায়।

র্যাব জানায়, গত ৪ এপ্রিল রাজশাহীর বাগমারার রনশিবাড়ী এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আব্দুর রাজ্জাক প্রামানিক নামে এক ব্যক্তিকে আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিরুল ধারাল ছুরি দিয়ে বুকের বা পাশে এলোপাথাড়ি জখম করে হত্যা করে। এরপরই হত্যাকারী আমিরুলকে স্থানীয় জনগণ ধাওয়া করে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে বাগমারা থানা পুলিশের একটি স্কর্ট ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই আসামিকে হেফাজতে গ্রহণ করে থানায় নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এ সময় অজ্ঞাতনামা ১০০০/১২০০ জন ব্যক্তি হাতে লাঠি ও ইটসহ উত্তেজিত অবস্থায় অবস্থান করে।
র্যাব আরও জানায়, পরবর্তীতে বেআইনি জনতা দলবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর এ্যাসল্ট করত: কাজে বাধা প্রদান করে এবং পুলিশ সদস্যদেরকে লাঠি ও ইট দিয়ে আঘাত করে জখম করে। এ সময় হত্যাকারী আসামিকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নেয়। পরে আনুমানিক সোয়া ৭টার দিকে স্থানীয় জনতা আব্দুর রাজ্জাকের হত্যাকারী আসামি আমিরুলকে পরিকল্পিতভাবে লাঠি ও ইট দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে। তার মাথায় গুরুতর আঘাত করে হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত চলে যায় তারা। পরবর্তীতে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতপূর্বক লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ওই নারকীয় ঘটনা ও দু’টি হত্যাকাণ্ড এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ভীতির সৃষ্টি করে।
বিজ্ঞাপন
র্যাব-৫ এর মিডিয়া উইং থেকে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনায় বাগমারা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। এর পরপর আসামিরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদেরকে আত্মগোপন করে রাখে। ওই ঘটনায় জড়িত আসামিদেরকে গ্রেফতারের জন্য অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। আসামিদেরকে গ্রেফতারে র্যাব-৫, সিপিএসসির একটি চৌকস অভিযানিক দল প্রতিনিয়ত আসামির গতিবিধি অনুসরণ ও বিশ্লেষণ করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৫, সিপিএসসি, রাজশাহী ও র্যাব-৭, সিপিএসসি, চট্টগ্রাম ক্যাম্পের একটি যৌথ অভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পলাতক আসামি খোরশেদ আলম ও ভুটু প্রামাণিককে মঙ্গলবার (২০ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার সময় চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানাধীন রাহাত্তারপুল এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
![]()
র্যাব-৫ রাজশাহীর উপ-অধিনায়ক মেজর আসিফ আল-রাজেক ঢাকা মেইলকে বলেন, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, মাদক, অস্ত্র, ছিনতাইকারী এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে র্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। রাজশাহীতেও বেশিরভাগ হত্যার ঘটনায় আসামিদের আমরাই গ্রেফতার করছি। বাগমারায় হত্যার ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তাদেরকে বাগমারা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অপরাধ দমনে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব সব সময় তৎপর রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিনিধি/এসএস

