শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী পাহাড়ের দরবেশ তলা ও বড় গজনী চৌরাস্তা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে দুই শ্রমিক মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (২০ মে) রাত সোয়া ৯টার দিকে দরবেশ তলা এলাকায় আকাশ মিয়া (৪০) এবং রাত ১১টার দিকে বড় গজনী চৌরাস্তা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এফিলিস মারাক (৫০) নামে এক আদিবাসী শ্রমিক হাতির আক্রমণে প্রাণ হারান।
বিজ্ঞাপন
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আল-আমীন।

নিহত আকাশ গান্ধীগাঁও গ্রামের ছলিমুদ্দিন তালুকদারের ছেলে এবং পেশায় শ্রমিক। অপরদিকে, এফিলিস মারাক বড় গজনী গ্রামের সহেন্দ্র মারাকের ছেলে এবং তিনিও কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
স্থানীয়রা জানান, গেল কয়েকদিন ধরে গজনী বিট ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন হালচাটি কোচপাড়া এলাকায় কয়েকটি বন্য হাতির দল অবস্থান করছিল। মঙ্গলবার রাতে আকাশ ওই এলাকায় চলাচলের সময় হঠাৎ বন্য হাতির দল তার ওপর আক্রমণ করে এবং মুখে পা দিয়ে পিষ্ট করে দেয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞাপন

অপরদিকে, এফিলিস মারাক তার বাড়ির পাশে বড় গজনী চৌরাস্তা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করার সময় বন্য হাতির দল তার ওপরও আক্রমণ করে, যার ফলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আল-আমীন বলেন, আকাশের মৃত্যুর বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এফিলিস মারাকের মৃত্যুর তথ্য পাই। তার মরদেহ স্থানীয়দের মাধ্যমে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

রিসার্চ অ্যান্ড কনজারভেশন অব এলিফ্যান্ট বাংলাদেশের সভাপতি আসিফুজ্জামান পৃথিল বলেন, হাতি খুবই শান্ত স্বভাবের তবে প্রতিশোধ পরায়ণ। গত এক সপ্তাহ ধরে গান্ধীগাঁও ও গজনী এলাকার আশপাশে প্রায় ৪০টির বেশি হাতিসহ একটি হাতির পাল অবস্থান করছে। এ বিষয়ে বন বিভাগ সবাইকে সতর্ক করলেও এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে। এদিকে গত ১৬ মে ওই অঞ্চলে হাতির একটি দলকে স্থানীয়রা মারাত্মকভাবে ধাওয়া করে এবং ঢিল ছুড়ে। তখন হতেই ক্ষিপ্ত হয়ে দলটি তাদের উল্টো ধাওয়া দেয়। খুব সম্ভবত এ দলটি দ্বারাই দু’জন পাহাড়ি মানুষ প্রাণ হারাল।
প্রতিনিধি/এসএস

