সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে পথেই ১০ মাসের শিশুর মৃত্যু, দায় কার?

জেলা প্রতিনিধি, বরগুনা
প্রকাশিত: ২০ মে ২০২৫, ০৭:৫৪ এএম

শেয়ার করুন:

Death

ছবির এই দৃশ্যটাই যেন বলে দেয় জীবন বাঁচাতে কীভাবে শেষ চেষ্টা চালাচ্ছেন চিকিৎসক। হাসপাতালের বিছানায় নিথর পড়ে আছে ১০ মাসের শিশু জুবায়ের, পাশে ভাঙা বুক নিয়ে দাঁড়িয়ে এক অসহায় বাবা। চারপাশে উৎকণ্ঠিত মানুষের ভিড়। এটি কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়, বরং বরগুনার তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মম বাস্তবতা।

জীবন বাঁচাতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়েছেন ডাক্তার-নার্সরা। বারবার সিপিআর, স্যালাইন, অক্সিজেন সবই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোথাও ছিল না একটি প্রয়োজনীয় জিনিস অ্যাম্বুলেন্স।


বিজ্ঞাপন


received_1072184198211519

জানা গেছে, শিশুটির বাড়ি তালতলীর সওদাগর পাড়া বেন্ডার স্লুইস গ্রামে। বাবা মো. ছগির তাকে অসুস্থ অবস্থায় আজ সোমবার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে বরিশাল বা পটুয়াখালী নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। তালতলীতে একটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে চালক না থাকায় সেটি পড়ে আছে অচল অবস্থায়।

আরও পড়ুন

পায়রা নদীতে ভেসে উঠল মৃত ডলফিন

শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যায় একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে পটুয়াখালী নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পথেই নিভে যায় শিশুটির প্রাণপ্রদীপ হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যায় জুবায়ের।


বিজ্ঞাপন


received_1375058460402741

শিশুটির বাবা ছগির মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সরকারের দেওয়া গাড়ি ধুলা খায়, আর আমার ছেলেটা মাটি খায়। ও বাঁচতে চাইছিল। আমি কিছুই করতে পারিনি।

তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের একটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, কিন্তু দীর্ঘদিন চালক না থাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বিষয়টি বহুবার সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে। শিশুটিকে বাঁচাতে ডাক্তাররা প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন।

received_1365010458060606

চিকিৎসকদের আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি ছিল না। ডা. মনির হোসেন ও সিনিয়র নার্স কারিমা বেগম অক্লান্তভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন একটার পর একটা সিপিআর, অক্সিজেন, স্যালাইন, হৃদযন্ত্র চালু রাখার চেষ্টা। তবু সময়ের অভাবে হেরে যেতে হয় মানবিক প্রচেষ্টাকে।

এ ঘটনার পর তালতলীর সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলছেন, আমরা অ্যাম্বুলেন্স চাই, চালক চাই, দায়িত্বশীল প্রশাসন চাই যাতে আর কোনো শিশুকে অকালে প্রাণ দিতে না হয়, আর কোনো মায়ের কোল যেন খালি না হয়। এই মৃত্যু কি শুধুই অসুস্থতার? নাকি রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনারও এক নির্মম দায়ভার?

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর