গত শুক্রবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে নাটোর সদর ও সিংড়া উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে নাটোর জেলার সদর ও সিংড়া উপজেলায় প্রায় ১০৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় গড়ে ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। প্রাথমিক জরিপ অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা সিংড়া, যেখানে ৮৩ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বাকি ২৫ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত জমি নাটোর সদর উপজেলায় অবস্থিত।
বিজ্ঞাপন
ক্ষতিগ্রস্ত জমির মধ্যে রয়েছে— ৫২ হেক্টর জমির বোরো ধান, ১৩ হেক্টর জমির ভুট্টা, ১০ হেক্টর জমির সবজি, ২০ হেক্টর জমির আম, ৩ হেক্টর জমির লিচু, ১০ হেক্টর জমির কলা।
নাটোর সদর উপজেলার তেগাছি এলাকার ভুট্টা চাষি আমিরুল ইসলাম জানান, তিনি সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলেন। গত রাতের ঝড়ে তার প্রায় অর্ধেক ভুট্টার গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। এসব ভুট্টা এখনও অপরিপক্ব ছিল। ফলে পুরো জমির ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
শিবদুর গ্রামের ধান চাষি মাসুদ রানা বলেন, তিনি ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। ধান কাটতে আর মাত্র ১৫ দিন বাকি ছিল। কিন্তু ঝড়ে আধা-পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এতে ধান চিটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তিনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
তেবাড়িয়া এলাকার কলা চাষি আবুল আজিজ বলেন, তিনি ৬ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলেন এবং প্রতিটি গাছে কলার থোর উঠেছিল। কিন্তু ঝড়ে তার সব কলাগাছ ভেঙে গেছে। এতে প্রায় এক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি জমি বর্গা নিয়ে এবং ধার-দেনা করে কলা চাষ করেছিলেন। এখন কিভাবে সেই ঋণ পরিশোধ করবেন, তা নিয়ে চরম হতাশায় রয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফকরের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে ভুট্টা ও আমের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমি ও ফসলের প্রাথমিক প্রতিবেদন ইতোমধ্যে অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।’
প্রতিনিধি/একেবি

