লালমনিরহাটের আদিতমারীতে বিয়ের নাটক সাজিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক নববধূর। এ ঘটনায় নববধূর খালাত বোনও জড়িত বলে মামলা সূত্রে জানা গেছে।
এ ঘটনায় নববধূ, তার সহযোগী এবং বিয়ের ঘটকসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী স্বামী হোসেন আলী।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে আদিতমারী থানায় এ অভিযোগ দায়ের করা হয়। ভুক্তভোগী হোসেন আলী আদিতমারী উপজেলার তালুক পলাশী গ্রামের খিজির মামুদের ছেলে।
অভিযুক্ত নববধূ রুমানা খাতুন (৩০) একই উপজেলার সাপ্টিবাড়ি এলাকার এনছার আলীর স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- বিয়ের ঘটক জোবাইদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম এবং লালমনিরহাট পৌরসভার নিকাহ রেজিস্টার কাজী আমজাদ হোসেন সরকার।
অভিযোগে হোসেন আলী জানান, এক বছর আগে তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর দ্বিতীয়বার বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ঘটক জোবাইদুল ও রবিউল তাকে পাত্রী দেখানোর কথা বলে গত ১৪ মে লালমনিরহাট শহরে নিয়ে যান। সেখানে স্বামী পরিত্যক্তা রুমানাকে দেখানোর পর পছন্দ হলে তাৎক্ষণিকভাবে এক লাখ টাকা দেনমোহরে কাজী আমজাদ হোসেন সরকারের অফিসে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিজ্ঞাপন
বিয়ের পর রাতেই রুমানাকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন হোসেন আলী। তার সঙ্গে ঘটক জোবাইদুলের মেয়েও আসে। পরদিন সকালে রুমানা তার বাবার অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে বেরিয়ে যায়। সঙ্গে নিয়ে যায় ঘরে রাখা তামাক বিক্রির ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং দেড় ভরি স্বর্ণালংকার। পরে সন্ধ্যায় না ফেরায় এবং মোবাইলফোন বন্ধ থাকায় হোসেন আলীর সন্দেহ হয়। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ঘরের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারও নিখোঁজ।
হোসেন আলী জানান, বিয়ের বকশিশ হিসেবে ঘটক জোবাইদুল ১০ হাজার টাকাও নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ঘটকদের কাছে গিয়েও কোনো সহযোগিতা পাননি। এমনকি নিকাহ রেজিস্ট্রির নকল চাইতে গেলে কাজী আমজাদ হোসেন তা না দিয়ে উলটো হুমকি দেন।
স্থানীয়দের দাবি, রুমানাসহ এই চক্রটির মূল কাজই হলো বিয়ের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। তাই তারা কোথাও স্থায়ীভাবে বসবাস করে না।
এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার কল করলেও অভিযুক্ত ঘটক জোবাইদুল রিসিভ করেননি। নববধূ রুমানার মোবাইলফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে কাজী আমজাদ হোসেন বলেন, রুমানা ও হোসেন আলীর নামে কোনো বিয়ের রেজিস্ট্রেশন তার অফিসে হয়নি। কেউ হয়ত অহেতুক তার নাম বলছে।
আদিতমারী থানার (ওসি) আলী আকবর বলেন, এটি চুরি চক্রের নতুন কোনো কৌশল হতে পারে। অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
প্রতিনিধি/এসএস

