সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

পঞ্চগড়ের পাঁচ শহীদের পরিবার পেল ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র

জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২৫, ০২:৪৫ এএম

শেয়ার করুন:

পঞ্চগড়ের পাঁচ শহীদের পরিবার পেল ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ছিল এক আবেগঘন পরিবেশ। কারও চোখে অশ্রু, কারও মুখে নিঃশব্দ শোক। একটি টেবিলের ওপর রাখা পাঁচটি খামে ছিল পাঁচ শহীদ পরিবারের জন্য ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। প্রত্যেক পরিবার পেয়েছে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে এই সঞ্চয়পত্র শহীদ পরিবারগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটি ছিল বিনয়ী, কিন্তু গভীর শ্রদ্ধায় পূর্ণ।


বিজ্ঞাপন


অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি, আন্দোলনের নেতা মোকাদ্দেসুর রহমান সানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন পঞ্চগড়ের পাঁচ তরুণ। তারা সবাই ছিলেন সমাজের নিচতলার মানুষ, কিন্তু স্বপ্ন দেখতেন সমতার।

শহীদদের পরিচয় 
আবু ছায়েদ: বোদা উপজেলার প্রধান হাটের মুদি দোকানদার। ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুর বছিলায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন।

শাহাবুল ইসলাম শাওন: দেবীগঞ্জ উপজেলার একজন কাঁচামাল ব্যবসায়ীর সন্তান। ৪ আগস্ট গাজীপুরে প্রাণ হারান।


বিজ্ঞাপন


সাগর ইসলাম: চাকলাহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি একজন ইন্টারনেট কর্মী ছিলেন। ৫ আগস্ট ঢাকার মেরুল বাড্ডায় নিহত হন।

সুমন ইসলাম: বোদা উপজেলার আমিননগরের বাসিন্দা, পেশায় পোশাক শ্রমিক ও ছাত্র। ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় প্রাণ হারান।

সাজু ইসলাম: চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাসা গ্রামের বাসিন্দা ও টেক্সটাইল কর্মী। বিজিবির গুলিতে আহত হয়ে ১২ আগস্ট মারা যান ময়মনসিংহ মেডিকেলে।

ফজলে রাব্বি বলেন, ‘তারা চোখ খুলে দিয়েছিলো—কে বঞ্চিত, কে নিপীড়িত, তা দেখিয়ে গেছে নিজেদের জীবন দিয়ে। আজকের এই সঞ্চয়পত্র তাদের আত্মত্যাগের মূল্য নয়, বরং একটি প্রেরণার স্বীকৃতি। তারা যেন শুধু সংখ্যায় হারিয়ে না যায়। প্রতিটি নামের পেছনে রয়েছে একটি পরিবার, একটি স্বপ্ন, একটি অসমাপ্ত গল্প।’

জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী বলেন, ‘এই তরুণরা জীবন দিয়েছেন একটি সমতার সমাজ গড়ার দাবিতে। আজ আমরা তাদের পরিবারকে সামান্য সম্মান জানাচ্ছি। এই সঞ্চয়পত্র শুধু টাকার মূল্য নয়, এটি জাতির দায়বদ্ধতার প্রতীক।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই অনুভব করেছেন—ত্যাগের ঋণ কখনও শোধ হয় না। তবে রাষ্ট্র শ্রদ্ধা জানিয়ে বলতে পারে, শহীদদের কথা আমরা ভুলিনি।

প্রতিনিধি/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর