সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মকর্তা কর্মবিরতি, স্থবির আমদানি-রফতানি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম

শেয়ার করুন:

চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মকর্তা কর্মবিরতি, স্থবির আমদানি-রফতানি

চট্টগ্রামে একদিকে কাস্টম হাউসের কর্মকর্তা, অন্যদিকে প্রাইম মুভার শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। বন্দরের ইয়ার্ডে আটকা পড়েছে শত শত কনটেইনার। 

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত ঘোষণা করায় কর্মবিরতি শুরু করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। তখন থেকে পণ্য খালাস, শুল্কায়ন ও অন্যান্য দফতারিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। 


বিজ্ঞাপন


অন্যদিকে সভাপতি ও চালককে পুলিশের মারধরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে নেমেছে প্রাইম মুভার শ্রমিক ইউনিয়ন। এতে বন্দরে পণ্য পরিবহনের কনটেইনার আনা-নেওয়া বন্ধ রয়েছে। ফলে বন্দর ইয়ার্ডে আটকা পড়ে আছে শত শত কনটেইনার। 

শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে আগ্রাবাদে ছুরিকাহত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য একটি প্রাইম মুভার গাড়ি থামায় পুলিশ। এত বড় গাড়িতে রোগী পরিবহণ সম্ভব না জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে ডবলমুরিং থানার ওসিসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য সংগঠনের সভাপতি সেলিম খান, চালক দেলোয়ার ও ফয়সালকে মারধর করে। এর প্রতিবাদেই সংগঠনটির পক্ষ থেকে বুধবার কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাইম মুভার ট্রেইলার, কংক্রিট মিক্সচার, ফ্ল্যাটবেড, ডা¤প ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের বলেন, সকাল থেকেই আমাদের কর্মবিরতি চলছে। বর্তমানে আমরা বন্দর জোনের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে এসেছি। এখানে একটি আলোচনা হবে। আমরা কাঙ্ক্ষিত আশ্বাস পেলেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেব। আমরা পুলিশের হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।

আকস্মিক কর্মবিরতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ স¤পাদক আমিনুর রহমান বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তা ও প্রাইম মুভার শ্রমিকরা কার্যক্রম বন্ধ রাখায় পণ্য আটকে রয়েছে। সময়মতো ডেলিভারি দিতে না পারলে আমরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবো। 


বিজ্ঞাপন


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএন্ডএফ এজেন্ট বলেন, কর্মকর্তারা আছেন। কিন্তু তারা কোনো ফাইলে হাত দিচ্ছেন না। তাই আমরা বসে আছি। কাজ আটকে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাস্টমস কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭ হাজার বিল অব এন্ট্রি ও বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল হয়। এরমধ্যে প্রায় ২ হাজার ডকুমেন্ট থাকে আমদানি সংক্রান্ত এবং ৫ হাজারের মতো থাকে রপ্তানি সংক্রান্ত। তবে কর্মবিরতির কারণে কোনো কার্যক্রমই চলছে না। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের সাথে একাত্মতা করে এ কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। তাই কখন এটি শেষ হবে তা জানি না।

কর্মবিরতি নিয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষে পরিবহণ বিভাগের সহকারী টার্মিনাল ম্যানেজার (কন্ট্রোল) রাজীব চৌধুরী বলেন, কাস্টমস অফিসারদের কর্মবিরতির কারণে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস এবং ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রাইমমুভারদের কর্মবিরতিতে খালাস হওয়া কনটেইনারও বের হচ্ছে না। তাই বন্দরে কনটেইনার জট সৃষ্টি হচ্ছে। 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের মুখপাত্র ও উপ-কমিশনার সাইদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, দেশের আমদানি-রফতানি পণ্যের ৯৯ শতাংশ কনটেইনারের মাধ্যমে পরিবহণ হয়। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৭ হাজার প্রাইম মুভার কনটেইনার পরিবহণে কাজ করে। দেশব্যাপী প্রায় ১৫ হাজার প্রাইম মুভার গাড়ি কনটেইনার পরিবহনে সক্রিয়।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর