সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের গ্রেফতারের খবর শুনে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে।
সেইসঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। আলোচনার ঝড় উঠে শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাটবাজারের চায়ের দোকানেও।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১২ মে) সকালে মমতাজ বেগমের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পরলে আলোচনার ঝড় উঠে মানিকগঞ্জের জেলা জুড়ে।
এর আগে, গতরাত পৌনে ১২টায় ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে মহানগরের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করেন।
মমতাজ বেগম মানিকগঞ্জ-২ আসনের (সিংগাইর, হরিরামপুর উপজেলা) আওয়ামী-লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের ভাকুম গ্রামের মধু বয়াতির মেয়ে মমতাজ বেগম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি হন মমতাজ বেগম এর পরে ২০১৪ সালে বিনা ভোটে এবং ২০১৮ সালে রাতের ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০২৪ সালের নির্বাচনে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সঙ্গে নৌকা প্রতীক নিয়ে মমতাজ বেগম হেরে জান। পরে মনিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার আওয়ামী-লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
৫ আগস্টের পর মমতাজ বেগমের নামে ঢাকার হাতিরঝিল থানায় একটি, আশুলিয়া থানায় একটি, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানায় একটি, সিংগাইর থানায় দুইটি, আদালতে একটি মামলাসহ প্রায় হাফ ডজন মামলা রয়েছে। এই মামলার মধ্য মমতাজ বেগমের নামে হত্যা মামলাও রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৮ সালে শিল্পী মমতাজ বেগমে পৈতৃক জামি ছিল ৪৮ শতাংশ। সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি পওয়ার পরথেকে মমতাজ বেগমের জমি বৃদ্ধি করতে থাকেন। বর্তমানে আমাদের জানামতে তার জমি রয়েছে ১৩ একরের মত। যার বর্তমান মূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
তারা আরও জানান, শুনেছি দেশের বাহিরেও তার বাড়ি রয়েছে। এছাড়াও ঢাকাসহ গ্রামে রয়েছে তার বিলাশ বহুল বাড়ি। দামি দামি গাড়ি।
মমতাজ বেগমের নির্বাচনি এলাকা হরিরামপুর উপজেলার যুবদলের সদস্য সচিব আবু সা'দাত মো. শাহিন জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সময় তিনি জনগণের ভোট বিহীন সংসদ সদস্য হন। আমরা তাকে কখনও সংসদ সদস্য মনে করিনি। কারণ জাতীয় সংসদে অংশগ্রহণের কোনো যোগ্যতাই তার নেই। তাই তার গ্রেফতারে আমরা খুশি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। কারণ তার শাসনামলেই আমাদের দলীয় অসংখ্য নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছে।
হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান মৃধা জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলের ভোটার বিহীন এমপি হয়েছিলেন মমতাজ বেগম। তার আটকে খবরে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ অত্যন্ত খুশি। আমাদের মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
উল্লেখ্য, গত বছর ৫ আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবর শুনার পর পরি মমতাজ বেগমকে এলাকায় আর দেখা যায়নি। আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।
প্রতিনিধি/ এজে

