সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

রাজশাহীতে অপসাংবাদিকতা ঠেকাতে ‘মিডিয়া মনিটরিং সেল’ গঠনের প্রস্তাব

জেলা প্রতিনিধি, রাজশাহী
প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

রাজশাহীতে অপসাংবাদিকতা ঠেকাতে ‘মিডিয়া মনিটরিং সেল’ গঠনের প্রস্তাব

রাজশাহীতে অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে এবং ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে ‘মিডিয়া মনিটরিং সেল’ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১২ মে) বেলা ১১টায় জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম জুলু এ প্রস্তাব দেন।

এর আগে সভায় এক পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, জেলা ও নগরীর বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকতার নামে পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


সভাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। সভায় সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি, ডিজিএফআই ও এনএসআই-এর কর্মকর্তারা এবং সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সবাই আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য।

সভায় মাসিক পর্যালোচনা প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর উন্মুক্ত আলোচনায় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

এ সময় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘অনেকে কার্ড ঝুলিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছেন। কথায় কথায় থানায় এসে বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেন। আমরা চাই, মূলধারার সাংবাদিকদের একটি তালিকা তৈরি করে আমাদের দেওয়া হোক। সাংবাদিক নেতারা এ বিষয়ে উদ্যোগ নিন, আমরাও নিচ্ছি। কারা ভুয়া সাংবাদিক, তা চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা জরুরি। কারণ এরা মানুষ, পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের ব্ল্যাকমেইল করছে।’

পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের পর রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম জুলু বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরাও বিব্রত। তবে রাজশাহীর বিভিন্ন দপ্তরে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকতার নামে যারা অপসাংবাদিকতা করছে, তাদের চিহ্নিত করতে এবং কিছু পত্রিকার কার্যক্রম যাচাই করতে ‘মিডিয়া মনিটরিং সেল’ গঠন করা যেতে পারে।’


বিজ্ঞাপন


তিনি আরও বলেন, ‘এই সেল জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হতে পারে। এতে পেশাদার ও অপেশাদার সাংবাদিকদের যাচাই-বাছাই করে অপেশাদারদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। তা না হলে এদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। রাজশাহী প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’

জুলুর প্রস্তাবনার প্রতি সমর্থন জানান আইনশৃঙ্খলা কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও।

সভায় রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। তিনি বলেন, ‘তিনি বিভিন্ন সময় নির্ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেন। এজন্য তাঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’

সভায় আরও কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘মাদকের ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। একটি চালান ধরেই অভিযান থামানো যাবে না। আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কোনো দল দেখেও কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। ইউএনওরা তাঁদের এলাকায় অপতৎপরতাকারীদের দমন করবেন এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনবেন। মাসে এক-দুইটি নয়, ১০–১৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে এবং অপরাধীদের আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, চলমান মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর