চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ যেন এক নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে। এই মাঠেই আয়োজন করা হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন—যা একই স্থানে অনুষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সমাবর্তন অনুষ্ঠান হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। আর সেই সমাবর্তনে সম্মান জানানো হবে চব্বিশের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ফরহাদ, তরুয়া, ওয়াসিম ও আবু সাঈদের অম্লান স্মৃতিকে।
রোববার (১১ মে) বিকেলে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেল, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠজুড়ে অসংখ্য ফেস্টুনের মাঝে কয়েকটি ফেস্টুনে উঠে এসেছে ওই শহীদদের মুখাবয়ব। তাঁদের আত্মত্যাগের কাহিনি যেন আবার ফিরে এসেছে ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণায়।
বিজ্ঞাপন
চবির পঞ্চম সমাবর্তন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী জানান, ‘সমাবর্তনে জুলাই শহীদদের নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সমাবর্তনের প্রধান বক্তা, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে তুলে দেওয়া হবে একটি বিশেষ সংকলন, যাতে থাকবে ক্যাম্পাসজুড়ে আঁকা গ্রাফিতিগুলোর প্রতিচ্ছবি।’
তবে এখানেই শেষ নয়। পুরো সমাবর্তনস্থলে থাকবে শহীদদের ছবি নিয়ে তৈরি একাধিক ফেস্টুন। এই আয়োজন যেন কেবল স্মরণ নয়—এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে প্রতিরোধ ও প্রতিবাদের উত্তরাধিকার হস্তান্তরের এক অনন্য প্রতীক।
এ বিষয়ে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেয়ালে দেয়ালে যে গ্রাফিতি এঁকে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, তা নিয়ে একটি সংকলন তৈরি করা হয়েছে। সেটি আমরা প্রধান বক্তার হাতে তুলে দেব—এটি হবে একটি প্রতীকী উপহার, যা আর কেউ পাবে না।’
এই আয়োজন যেন একসঙ্গে অতীতের প্রতিচ্ছবি, বর্তমানের স্বীকৃতি এবং ভবিষ্যতের চেতনার বহিঃপ্রকাশ। চবির এবারের সমাবর্তন কেবল স্নাতকদের গাউন-পট্টি পরানোর আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি হয়ে উঠছে ইতিহাস, প্রতিবাদ ও স্মৃতির এক মহামঞ্চ।
বিজ্ঞাপন
প্রতিনিধি/একেবি
