বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরের নায়েবে আমির ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (১১ মে) সকাল ১১টায় চট্টগ্রামের প্যারেড ময়দানে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন তার দ্বিতীয় ছেলে মুয়াজ আবরার। জানাজার পর মরদেহ তার জন্মস্থান ভোলার চরফ্যাশনে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে পরবর্তী জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর প্রেস সচিব মো. আবদুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার (১০ মে) দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরের আমির এবং সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তব্যে মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এক বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মেধাবী নেতাকে হারিয়েছে। এই শূন্যতা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। আল্লাহ ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহকে জান্নাতবাসী করুন।’
জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক আহসানউল্লাহ ভূঁইয়া, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন এবং মরহুমের বড় ছেলে মোছান্না।
বিজ্ঞাপন
ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর ইন্তেকালে গভীর শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী এবং কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম-২ আসনে মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন।
তাঁদের শোকবার্তায় বলা হয়, ‘ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর ইন্তেকালে আমরা ইসলামী আন্দোলনের একজন নিবেদিত প্রাণ ভাইকে হারিয়েছি। তিনি ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। ইসলামী আন্দোলনের প্রচার ও প্রসারে তার অবদান অবিস্মরণীয়।’
তাঁরা আরও বলেন, “আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যেন তাকে ক্ষমা ও রহম করুন, কবর প্রশস্ত করুন, গুনাহগুলো ক্ষমা করে নেকিতে পরিণত করুন এবং প্রতিটি মঞ্জিল তার জন্য সহজ, আরামদায়ক ও কল্যাণময় করে দিন। আল্লাহ তাকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন এবং শোকাহত পরিবার-পরিজনকে এই শোক সইবার তাওফিক দিন।”
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ সর্বশেষ চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ছিলেন একজন কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক। তিনি মাসিক ‘অঙ্গীকার ডাইজেস্ট’-এর সম্পাদক এবং ‘হুইল বিজনেস ম্যাগাজিন’-এর প্রধান সম্পাদক ছিলেন। তাঁর লেখা জনপ্রিয় বইয়ের মধ্যে ‘তরুণ তোমার জন্য’ ও ‘স্বপ্নের সাহসী ঠিকানা’ উল্লেখযোগ্য।

ভোলার চরফ্যাশনে জন্মগ্রহণকারী ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে কমনওয়েলথ এক্সিকিউটিভ এমবিএ সম্পন্ন করেন। তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাকালীন রেজিস্ট্রার ছিলেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
প্রতিনিধি/একেবি

