পূর্ব শত্রুতার জেরে রাতের আঁধারে এক অসহায় দরিদ্র কৃষকের আড়াইশ পেঁপে গাছ কেটে সাবাড় করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই কৃষকের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার।
ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের কাউনিয়ায় উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের কুটিরপাড় এলাকায়।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটায় দুর্বৃত্তরা। ক্ষতিগ্রস্ত ওই কৃষকের নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের সাধু লিচু বাগান এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে৷
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, প্রায় ৪ বছর আগে বাৎসরিক ৪৫ হাজার টাকায় স্থানীয় মসজিদের জমিসহ ১ একর জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদ করে আসছেন তিনি। এর মধ্যে ২৪ শতক জমির মধ্যে তিনশটি পেঁপের চারা রোপণ করেন তিনি। পরিশ্রম আর পরিচর্যায় সারি সারি পেঁপে গাছে ভরা বাগান ফুল ও ফলে ভরে উঠেছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বাজারজাত করা কথা ছিল তার। বাজারজাত করা টাকা দিয়ে এনজিওর কিস্তি ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ যোগান দেওয়ার কথা ছিল কৃষক আনোয়ারের।
কিন্ত এরই মধ্যে শুক্রবার (৯ মে) সকালে বাগানে গিয়ে দেখেন তার স্বপ্নের বাগানের পেঁপে ধরা প্রায় আড়াই গাছ মাটিতে পড়ে আছে। সবগুলো গাছেই থোকা থোকা পেঁপে ধরেছিল। যেগুলো আর কিছুদিন পরে বিক্রি করা যেত।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আমি খুবই সহজ সরল জীবন যাপনের চেষ্টা করি। আমার জানা মতে, কারও সঙ্গে তেমন কোনো শত্রুতা নেই। তবে ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে শত্রুতা থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন ফল ও ফলজের বাগান করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। এবারে তার পেঁপে বাগানে ২৫০টির বেশি গাছ ছিল। কিন্তু তার সঙ্গে কারও শত্রুতার কথা তারা কোনদিন শোনেননি। তবে ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে এটা পূর্ব শত্রুতার জেরেই এটা করা হয়েছে। যারা তার এই ক্ষতি করেছেন তারা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন। এলাকাবাসী এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে যারা এই অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান।
শহীদবাগ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন জানান, মানুষের সঙ্গে মানুষের শত্রুতা থাকতেই পারে। তাই বলে গাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা। যারা এই অন্যায় কাজটি করেছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। যাতে করে ভবিষ্যতে কেউ আর এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া আকতার জানান, ঘটনাটি জানার পর সেখানে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে কীভাবে প্রদোনার আওতায় আনা যায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ শাহ জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত সাপক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে বা যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
প্রতিনিধি/এসএস