সম্ভাব্য কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে গাইবান্ধা জেলার কৃষকদের বোরো ধান ৮০ শতাংশ পরিপক্ক হলেই তা কেটে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। এই পরামর্শ অনুযায়ী ইতোমধ্যে কৃষকরা ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন। মাঠজুড়ে দোল খাচ্ছে হাইব্রিড ধানের সোনালি শীষ।
সম্প্রতি গাইবান্ধা সদর উপজেলার চাপাদহ কৃষি ব্লকে দেখা গেছে, কৃষকদের ৮০ শতাংশ পরিপক্ক বোরো ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম রাজু। শুধু এই ব্লকেই নয়, জেলার সাতটি উপজেলার প্রতিটি কৃষি ব্লকে গিয়ে কৃষকদের পাশে কাজ করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
বিজ্ঞাপন
চাপাদহ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম রাজু বলেন, ‘সম্ভাব্য বিরূপ আবহাওয়া থেকে ধান রক্ষায় খেতের ৮০ শতাংশ ধান পরিপক্ক হলে তা কেটে নিরাপদ ও শুকনো স্থানে উঠিয়ে ফেলতে হবে। সেই সঙ্গে ধানখেতে যেন পানি জমে না থাকে, সে জন্য নালা পরিষ্কার করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা জরুরি।’
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে গাইবান্ধা জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে, অর্থাৎ ১ লাখ ২৯ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এখান থেকে প্রায় ৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় ৩২ শতাংশ ধান কর্তন করেছেন কৃষকরা।
মাঠপর্যায়ে দেখা গেছে, কৃষকরা দেশীয় জাতের চিকন ধান কাটতে শুরু করেছেন। এসব ধান ঘরে তোলার পর হাইব্রিড জাতের ধান কাটার কাজ পুরোদমে শুরু হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত ধান ঘরে তুলতে পারলে কৃষকরা ভালো লাভবান হবেন বলে জানা গেছে।
পূর্ব চাপাদহ এলাকার কৃষক আবু সালেক জানান, চলতি বোরো মৌসুমে তিনি দুই একর জমিতে ধান আবাদ করেছেন এবং ফলনও ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তবে সব ধান ঘরে তুলতে পারব।’ তবে তিনি জানান, খেতে কিছুটা রোগবালাই দেখা দিয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ধান কাটার কাজ শুরু করেছেন।
বিজ্ঞাপন
গাইবান্ধা সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম রাজু আরও বলেন, ‘এ বছর বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকদের লাভবান করতে মাঠপর্যায়ে লিফলেট বিতরণসহ নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ফসল রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমও চলছে।’
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, ‘চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়াসহ খরচ কমাতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। এখন তাদের খেতের ৮০ শতাংশ পরিপক্ক ধান কেটে ফেলার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
প্রতিনিধি/একেবি