কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দৈনিক বাংলার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির দফতর সম্পাদক সাকিব আসলামকে পোশাগত দায়িত্ব পালনকালে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একাধিক ইবি শাখা সহ-সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙার পর জুলাই আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ আখ্যা দেওয়ার অভিযোগে ও হলে অবৈধভাবে অবস্থান করার কারণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাস সাংবাদিক ওয়াসিফ আল আবরারকে শাহ আজিজুর রহমান হলে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এসময় তার বিরুদ্ধে কলেজে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও তোলা হয়। আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনার পর ওই সাংবাদিককে চিকিৎসার জন্য ইবি মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হলে সংবাদ সংগ্রহের জন্য মেডিকেলে যান সাংবাদিক সাকিব আসলাম। এসময় তাকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এসময় ইবি শাখা সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, ইসমাইল হোসেন রাহাত, সায়েম আহমেদ, সহ-সমন্বয়ক ও ছাত্রদল কর্মী তৌহিদ ইসলাম, শিক্ষার্থী নূর আলমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
হেনস্তার শিকার সাংবাদিক সাকিব আসলাম বলেন, এ ঘটনার পর আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য মেডিকেলে গিয়েছিলাম ডাক্তারের বক্তব্য নেওয়ার জন্য। এসময় তারা আমার দিকে তেড়ে এসে নানাভাবে আমাকে হুমকি ও গায়ে হাত তোলে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আমাকে হেনস্তা করেন তারা এবং লাঞ্ছনা ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরবর্তীতে আমাকে মেডিকেল অফিসারের বক্তব্য নিতে দেয়নি তারা। একইসঙ্গে আমরা কীভাবে চলব তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তারা। আমি এমন অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসে প্রক্টর স্যার না থাকায় এই ঘটনার প্রেক্ষিতে লিখিত অভিযোগ দেয়ার সুযোগ হয়নি। তবে স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আগামীকাল অভিযোগ নিবেন বলেছেন।
বিজ্ঞাপন
ইবি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সহ সমন্বয়ক ও শাখা ছাত্রদলের একাংশের কর্মী একাউন্টিং বিভাগের তৌহিদুল ইসলাম ওই সাংবাদিকে (সাকিব) বলেন, তোর নেতৃত্বে এই মারামারি হয়েছে। তোমার নেতৃত্বে হত্যার উদ্দেশে হামলা করা হয়েছে। তুই ছাত্রলীগের দোসর।
মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তারের বক্তব্য নিতে গেলে ইবি সহ সমন্বয়ক ইসমাইল হোসেন রাহাত বাধা দিয়ে বলেন, আপনি ভেতরে ঢুকতে পারবেন না। আমি রাহাত বলছি আপনি ঢুকতে পারবেন না। ও এখানে আইছে কেন?
এসময় জার্নালিজম বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নূর-ই-আলম মারমুখী হয়ে বলেন, বের হ তুই, ও লিড দিয়ে মারছে। ওর নেতৃত্বে আবরারকে রুম থেকে বের করেছে।
এসময় ওই সাংবাদিককে (সাকিব আসলাম) হেনস্তা ও গায়ে হাত তুলার ধারণ করা ভিডিও প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত আছে।
এসময় ইবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ সমন্বয়ক সায়েম আহমেদ ওই সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে বলেন, কত বড় সাহস তুই এখানে আসছিস।
এ সময় ইবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, ওই রিপোর্টার্স ইউনিটি কীভাবে থাকে আমি দেখে নেব। এ সময় তিনি ওই সাংবাদিককে হেনস্তা করে বলেন, তুই মারার পর ক্যামেরার ভয় দেখাস। ওর ক্যামেরা ভেঙে ফেল।’
সাংবাদিক হেনস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, জুলাই আন্দোলনে সাকিব আসলামের ভূমিকা খুবই ইতিবাচক এবং সন্তোষজনক। গতকালের ঘটনায় শাহ আজিজুর হল থেকে মেডিকেল যাওয়ার সময় প্রত্যক্ষদর্শীর কথা অনুসারে সাকিব আসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং আংশিক অংশের নেতৃত্ব দিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মনে হয়েছে সাকিব আসলাম যেহেতু ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সেহেতু মেডিকেলে উপস্থিতদের মনে হয়েছে সাকিব আসলাম কোনো পজিটিভ ভূমিকা রাখতে পারবে না তাই তাকে কেউ ঢুকতে দিতে চায়নি। কিন্তু তার ওপর গায়ে হাত তোলার বিষয়টি ভিত্তিহীন।
প্রতিনিধি/এসএস

