মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মধ্যরাতে মেঘনায় ইলিশ ধরতে নামবে জেলেরা

জেলা প্রতিনিধি, চাঁদপুর
প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৩ পিএম

শেয়ার করুন:

মধ্যরাতে মেঘনায় ইলিশ ধরতে নামবে জেলেরা

জাটকা রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাসের অভয়াশ্রম শেষে ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে চাঁদপুরের মেঘনা পাড়ের হাজার হাজার জেলে। জাল ও নৌকা মেরামত করার কাজে এখন তাদের ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে ৩০ এপ্রিল মধ্যরাতে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরতে নামবে জেলেরা। ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন জেলে ও মৎস্য বিভাগ। কিছু জেলের অভিযোগ নিষেধাজ্ঞার সময়ে অসাধু জেলেরা কারেন্টজাল ব্যবহার করে জাটকা নিধন করেছে।

সরেজমিন সদর উপজেলার আনন্দবাজার, শহরের টিলাবাড়ি, পুরাণ বাজার রনাগোয়াল, দোকানঘর, মধ্য বাখরপুর, বহরিয়া ও হরিণা ফেরিঘাট এলাকার জেলে পাড়ায় দেখা গেছে অধিকাংশ জেলে তাদের নৌকা মেরামত ও জাল প্রস্তুত করার কাজ করছে। মেঘনা সংযুক্ত খালগুলোতে জেলেদের শত শত নৌকা। ভোর থেকেই মাছ ধরার সরঞ্জাম প্রস্তুত কাজ করছে। দীর্ঘ দুই মাস অবসর সময় কাটানোর পর আবারও জেলে পাড়া সরগরম হয়ে উঠেছে।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_1000140260

সদরের আনন্দ বাজার এলাকার জেলে বিল্লাল হোসেন বলেন, এ বছর জাটকা রক্ষায় যে অভিযান দিয়েছে, তাতে আমাদের মহল্লার শত শত জেলে বেকার হয়ে পড়ে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে আমরা নদীতে নামেনি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে মাসে ৪০ কেজি চাল সহায়তায় সংসার চালানো খুবই কঠিন।

আরও পড়ুন

মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা, ইলিশ ধরতে জেলেদের প্রস্তুতি

দোকানঘর এলাকার জেলে সেলিম মিয়া বলেন, জাটকা বড় হওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিলেও এক শ্রেণির জেলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জাটকা নিধন করেছে এবং গোপনে বিক্রি করেছে। আমরা নিষেধাজ্ঞা মেনেছি এবং জাল প্রস্তুত করছি ইলিশ ধরার জন্য।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_1000140258

মধ্য বাখরপুর এলাকার জেলে শাহজাহান মিজি বলেন, দুই মাসের অভিযান পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমরা ঋণ নিয়ে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে জাল নৌকা প্রস্তুত করেছি। নদীতে নামলে বুঝা যাবে ইলিশ পাওয়া যায় কিনা। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।

একই এলাকার জেলে আজাদ খান বলেন, তিন লাখ খরচ কইরা নাও ঠিক করছি। নদীতে নামমু, যদি ইলিশ পাই, তাইলে কিস্তিুও দিতে পারমু এবং খাইয়া বাঁচমু।

thumbnail_1000140254

ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের আরেক জেলে মুসলিম মিজি বলেন, দুই মাস খুবই কষ্ট কইরা চলছি, রোজগার ছিল না। ১০ টাকার জায়গায় ১ টাকা খরচ করছি। আল্লাহর ওপর ভরসা রাইক্কা নদীতে নামমু। যদি আল্লাহ দেয়।

সদরের মৎস্যজীবী নেতা তছলিম ব্যাপারী বলেন, ইলিশ পাওয়ার আশায় জেলেরা নদীতে নামবে এবং সেই হিসেবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা এসব জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির জন্য চেষ্টা করছি এবং উপকরণ দেওয়া হচ্ছে। ইলিশ পাওয়া না পাওয়া হচ্ছে প্রাকৃতিক বিষয়।

thumbnail_1000140256

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস পদ্মা-মেঘনায় আমরা কঠোর নজরদারিতে রেখেছি। জেলার নিবন্ধিত প্রায় ৪৩ জেলের প্রত্যেককে ৪ মাস ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের নদীতে নামতে দেওয়া হয়নি। আশা করি জেলেরা তাদের কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাবে।

উল্লেখ্য, ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনার প্রায় ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার। এই সময় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ ছিল।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর