বিভিন্ন সময়ে অপরাধকর্মে জড়িত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৭ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবির সাবেক সমন্বয়কেরা।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক বার্তায় এ আল্টিমেটাম দেন সালাউদ্দিন আম্মার।
বিজ্ঞাপন
বার্তায় শিক্ষক ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করছে এবং জুলাই বিরোধী ন্যারেটিভ দাড় করাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমন অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘আগামী ৭ দিনের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আওয়ামী চিহ্নিত দালাল শিক্ষক এবং সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা না নেয়, আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করব। এবং আমি বাদী হয়ে মামলা করলে, আপনাদেরও মামলা করতে বাধ্য করব।

তিনি আরও বলেন, ‘এর ফলে ওই দালালদের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা চলবে। আমি সারাজীবন কোর্টে হাজিরা দেব, টাকা খরচ করব, তবুও কোনো ছাড় নাই। অনেক আওয়ামী শিক্ষক এখন ক্লাসে এসে জুলাই বিরোধী ন্যারেটিভ দাঁড় করাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে, অনেকে আবার অনলাইনে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে শিবিরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক ও সাবেক সমন্বয়ক নওসাজ্জামান এক ফেসবুক পোস্ট লিখেন, ‘সব জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে এই কুলাঙ্গারগুলো। রাবি প্রশাসনকে আমরা বলতে চাচ্ছি, অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে শাস্তি নিশ্চিত করুন। নাহলে এই রাবি আরও একটা ১৭ জুলাই দেখবে। এদের সঙ্গে আপনাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক বাসায় দেখাবেন, ১৬ জুলাইয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নামে তপু প্রশাসন যখন মামলা করেছিল তখনও আপনাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সেই সময় কোথায় ছিল আপনাদের সুশীলপনা? যদি আন্দোলনকারীদের জীবনের থেকে আপনাদের কাছে কোনো কিছু গুরুত্বপূর্ণ থাকে তাহলে রাবি আন্দোলনকারীরা বসে থাকবে না। এটাই শেষ বার্তা।’
বিজ্ঞাপন

আওয়ামীপন্থিদের কয়েকটি ফেসবুক পোস্টের জবাব দিয়ে সাবেক সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম বলেন, ‘কোনটা বাড়াবাড়ি? আপনার নেত্রী যখন হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে, সেটা? নাকি সেই নেত্রীকে খুনি না বলতে চাওয়া? কোনটাকে বাড়াবাড়ি বলতে চাচ্ছেন? পতিত আমলে তো মুজিব আর হাসিনার কীর্তন গেয়ে গেলেন, এখন পারলে জিয়া আর খালেদার গুণ গাইতে শুরু করেন, তাহলে আগের আমলের মতো কিছুটা নুনভাত জুটতে পারে কপালে।
তিনি আরও জানান, আপনার মতো ফ্যাসিস্টের তল্পিবাহককে আমাদের ঠিকই চেনা আছে। ইতিহাসের নিকৃষ্টতর ফ্যাসিস্ট হাসিনার অপকর্মকে 'সাফল্য' আখ্যা দিয়ে বিশাল বই লিখেছেন অনেকে, আন্দোলনের সময় ছাত্রদেরকে তাণ্ডবকারী আখ্যা দিয়ে পত্রিকায় কলাম লিখেছেন।
৫ আগস্টের পরেও আপনারা ভালো হইলেন না, ইনিয়ে বিনিয়ে ফ্যাসিস্ট নেত্রীর গুণগান গেয়ে যাচ্ছেন। ৫ আগস্টের পরে কয়েক মাস বিড়ালের ছানার মতো গর্তে লুকিয়েছিলেন! এখন ভয় কেটে যাওয়ায় আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাচ্ছেন! ভাববেন না ছাত্র জনতা আপনাদেরকে ভুলে যাচ্ছে, শুধু সময়ের অপেক্ষা!’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী জি এ সাব্বির বলেন, এই আওয়ামী শু*য়োরেরা এখনও বহাল তবিয়তে এই ক্যাম্পাসে আছে। প্রশাসনের দুর্বলতা এদের কথা বলার সাহস জোগাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, জুলাই বিপ্লবের চেতনার বাস্তবায়ন হয়নি। আওয়ামী দোসরদের বিচার করতে ব্যর্থ বর্তমান প্রশাসন। নানাভাবে ফ্যাসিস্টরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্পষ্টভাবে বলেছি আগামী ৭দিনের মধ্যে এসব দোসরদের বিরুদ্ধে অপরাধ অনুযায়ী মামলা করতে হবে, ব্যবস্থা নিতে হবে। নাহলে আমরা আবার মাঠে নামব প্রয়োজনে নিজে মামলা করব।’
প্রতিনিধি/এসএস

