বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। এরইমধ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে চীনের প্রতিনিধিদের সফল আলোচনা হয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের ঘাসুড়া গ্রামে আমচাষি রফিকুল ইসলামের আমবাগান পরিদর্শন করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। সঙ্গে ছিলেন চীনের বেশ কয়েকজন আমদানিকারক প্রতিনিধি।
বিজ্ঞাপন
পরিদর্শনের সময় রাষ্ট্রদূত বাগানের কার্যক্রম ঘুরে দেখেন এবং আমের উৎপাদন ও মান পর্যবেক্ষণ করেন। শেষে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে জানান, চীন বাংলাদেশ থেকে আম আমদানি করতে প্রস্তুত এবং চলতি মৌসুম থেকেই রফতানি শুরুর আশা করছে।
উত্তম কৃষি চর্চায় উৎপাদন, নিরাপদ আমের প্রশংসা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী জানান, ‘গত কয়েক বছর ধরে জেলার আম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। এবার চীনের মতো বড় বাজারে প্রবেশের লক্ষ্যে আমরা শুরু থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় নিরাপদ ও উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে আম উৎপাদন করা হয়েছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
নাচোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সলেহ আকরাম বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতের পরিদর্শন আমাদের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক একটি বার্তা। তিনি আমের স্বাদ, রঙ ও চাষাবাদের পদ্ধতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।’
বিজ্ঞাপন
চাষিরা আশাবাদী, খরচ কম — লাভ বেশি
আমচাষি রফিকুল ইসলাম জানান, ‘রাষ্ট্রদূত ও চীনা প্রতিনিধিরা আমাদের আম খেয়ে প্রশংসা করেছেন। তারা বলেছেন, চীনের মতো বড় বাজারে এই আমের চাহিদা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপে আম রফতানিতে প্রতি কেজিতে পরিবহন খরচ পড়ে ৪৮০-৫২০ টাকা। অথচ চীন থেকে বলা হয়েছে, তারা আম নিতে পারবে মাত্র ৮০-৯০ টাকা কেজি পরিবহন খরচে। এতে আমাদের উৎপাদকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন এবং লাভবান হবেন।’
চাষিদের মতে, চীনের মতো বড় বাজারে প্রবেশের সুযোগ পেলে দেশের আমচাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি প্রান্তিক কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থাও আরও শক্তিশালী হবে।
উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি কর্মকর্তারা
রাষ্ট্রদূতের বাগান পরিদর্শনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা সরকার, নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সলেহ আকরামসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
প্রতিনিধি/একেবি

