আদালতের রায়ে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌরশহরের ওয়ারিশের ১ একর ৭৪ শতক জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই জমিতে থাকা একটি পাকা ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকৃত জমির বর্তমান বাজার মূল্য ৫ কোটি টাকার বেশি বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পৌর শহরের দৌলতপুর এলাকায় দাদীর ওয়ারিশের ১ একর ৭৪ শতক জমির দাবিতে ২৮ বছর আগে আদালতে মামলা করেন স্থানীয় আব্দুল ছাত্তার ও তার ভাই মরম আলী।
বিজ্ঞাপন
মামলা চলাকালে গত ৭-৮ বছর আগে মারা যান মরম আলী। প্রায় ৬ বছর আগে মারা যান আব্দুল ছাত্তার। তবে তাদের সন্তানরা মামলা চালিয়ে যান। গত কয়েক বছরে ওই সম্পত্তির পক্ষে তারা দফা ডিক্রি পান। সম্প্রতি আদালতের চূড়ান্ত রায় পান আব্দুল ছাত্তার ও মরম আলীর সন্তানেরা। বাদী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে জায়গা মাপার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেন আদালত। পরে আজ সোমবার আইন কমিশনারের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্টরা ওই জায়গার দখল বুঝিয়ে দিতে আসেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তা, সার্ভেয়ার, পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মামলা চলাকালে বিবাদী পক্ষ কিছু জমি কৌশলে খালি করে অন্য ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। ওই জায়গায় স্থাপনা তৈরি করা হয়েছিল, সেগুলো আজ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
বাদী, মৃত মরম আলীর ছেলে শহীদ মিয়া বলেন, ‘আমার বাবার দাদীর ওয়ারিশের সম্পত্তি ওই পক্ষের লোকজন দিচ্ছিল না। আমার বাবা-চাচা মিলে ওই জমির দাবিতে মামলা করেন। মামলা চলাকালে আমার বাবা-চাচা মারা যান। আদালত সম্প্রতি জায়গা মাপার মাধ্যমে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার রায় দিয়েছেন। তাই আজকে এই কার্যক্রম চলছে।’
অপর বাদী, মৃত আব্দুল ছাত্তারের ছেলে মো. রবি মিয়া বলেন, ‘স্থানীয় কেদু বেপারী ও গেদু বেপারীর কাছে আমার বাবার দাদীর ওয়ারিশ পাওনা ছিল। তারা ওয়ারিশ না দেওয়ায় বাবা-চাচা মিলে ওই মামলা করেন। যদিও মামলা চলাকালে বাদী-বিবাদী সকলেই মারা গেছেন, উভয় পক্ষের সন্তানেরা মামলা চালিয়ে গেছে দীর্ঘদিন। অবশেষে আমরা রায় পেলাম, তাই আজ জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জেলা আইন কমিশনার সংশ্লিষ্ট লোকজন নিয়ে জায়গাটি মাপতে এবং বুঝিয়ে দিতে এসেছেন।’
বিজ্ঞাপন
ওয়ারিশদার নয়ন মিয়া ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা এই জায়গার ওয়ারিশদার। দীর্ঘ বছর ধরে মামলার পর আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাই আজ জায়গাটি দখলমুক্ত করে মাপা হচ্ছে এবং বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে।’
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা জেলার আইন কমিশনার তরুণ কমল বিশ্বাস বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে জায়গা মাপা হচ্ছে এবং প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই জায়গায় যদি কোন স্থাপনা থাকে, সেগুলোর অপসারণের নির্দেশনা আদালত দিয়েছেন। তাই আমরা স্থাপনাগুলো অপসারণ করছি।’
প্রতিনিধি/একেবি

