বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, বিএনপি সকলকে সঙ্গে নিয়ে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বিশ্বাসী। কারণ বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। দলের মধ্যে অবাধ গণতন্ত্রের চর্চা অবারিত আছে। দীর্ঘ দিন পরে খোলামেলা পরিবেশে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরেছি। কারণ ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের আনন্দ উচ্ছ্বাস সবকিছু কেড়ে নিয়েছিল।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে সরকারি এম এম কলেজ মাঠে এক বর্নিল আয়োজনের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফুটলব উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন দীর্ঘসময় ফ্যাসিবাদের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে সমগ্র জাতি শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্য দিয়ে তাদের জীবন অতিবাহিত করেছে। আমাদের কারও স্বাভাবিক জীবন ছিল না। আনন্দ উচ্ছ্বাস বলতে আমাদের কিছুই ছিল না। যশোরের মত দেশের ক্রীড়াঙ্গন অস্থবির হয়ে পড়েছিল। ক্রীড়াঙ্গণকে অচল অবস্থায় পরিণত করে কথিত ক্রীড়া সংগঠকেরা অবৈধ সরকারের দালাল হিসেবে কাজ করেছিল। আমরা সেই ক্রীড়াঙ্গণকে আবার সচল করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, যশোরে ক্রীড়াঙ্গণের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক যে ঐতিহ্য ছিল সেটিকে আবার পুনরায় বিকশিত করতে চাই। বৈশাখ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বিএনপি তাদের চিন্তা, বিশ্বাস ব্যক্ত করতে পেরেছে। ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক মাধ্যমে, জাতীয় জীবনে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনা সম্ভব। এই দেশ আমাদের, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন এমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। জুলাই বিপ্লবের পর এমন আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে। আমরা সবাইকে নিয়ে সুন্দর দেশ, সমাজ গড়তে চাই।" তিনি আরও বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। দল, মত নির্বিশেষে সবাই খেলাধুলা করবে। এই খেলার আয়োজনের মাধ্যমে বৈশাখের চেতনার প্রতিফলন হয়েছে। এদেশ আমাদের। দেশের সংস্কৃতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, বিএনপি নেতা অ্যাড. এসহাক আলী, সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, কলেজের অধ্যক্ষ মফিজুর রহমান, ফুটবল উৎসবের আহ্বায়ক মাসুদ হাসান টিটো, ক্রীড়া সংগঠক মির্জা আখিরুজ্জামান সান্টু, এবিএম আখতারুজ্জামান, ইউসুফ হাসান, খায়রুজ্জামান বাবু, এহসানুল হক সুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ফয়সাল আমীর, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর ও সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি, কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক হাসান ইমাম প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
পরে প্রধান অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথিকে সঙ্গে নিয়ে শান্তির প্রতীক পায়রা, বেলুন ফেস্টুন উড়িয়ে ফুটবল উৎসবের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোরআন তেলোয়াতের পাশাপাশি জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এছাড়া মাঠ জুড়ে দলীয়, ক্রীড়া এবং অলিম্পিকের পতাকা উত্তোলন করা হয়। উদ্বোধনী খেলায় মুখোমুখি হয় ৬ নম্বর ওয়ার্ড ২-০ গোলে ৪ নম্বর ওয়ার্ডকে পরাজিত করে। এদিকে দীর্ঘদিন পরে যশোরের মাটিতে ফুটবলের জমজমাট আসরকে কেন্দ্র করে যশোর সরকারি সরকারি এম এম কলেজ মাঠ দর্শকদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে কানায় কামায় পূর্ণ হয়ে যায়। দুই দলের খেলোয়াড়দের মুহুর্মুহু আক্রমণ, বাদক দলের বাদ্যের তালে তালে এবং ভুভুজেলার বাঁশিত বিমোহিত হন তারা।

