মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ঢাকা

অনশন ভাঙলেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা, উপাচার্যের অব্যাহতিতে উল্লাস

জেলা প্রতিনিধি, খুলনা
প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪০ এএম

শেয়ার করুন:

অনশন ভাঙলেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা, উপাচার্যের অব্যাহতিতে উল্লাস

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন প্রত্যাহার করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের একদফা দাবিতে প্রায় ৫৮ ঘণ্টা ধরে চলা অনশন বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ভাঙেন তারা। অনশন ভাঙাতে শিক্ষার্থীদের জুস পান করান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান।

অনশন ভাঙানোর আগে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি বার্তা পড়ে শোনান অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে সমস্যা নিরসন ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে কুয়েটের উপাচার্য ও সহউপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পরিচালনার লক্ষ্যে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্যে থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্য’র দায়িত্ব দেওয়া হবে।’


বিজ্ঞাপন


বার্তাটি শোনার পরপরই ক্যাম্পাসে উল্লাসে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার প্রাঙ্গণে আনন্দ মিছিল বের হয়। আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ফেসবুক পেজ ‘কুয়েট ১৯’-এ পোস্ট করা হয়, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আমরা জিতেছি। আমার ভাইরা জিতেছে। মাছুদ পদত্যাগ করেছে!’

এর আগে বুধবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে কুয়েট ক্যাম্পাসে আসেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং অনশন ভাঙার অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা তখনও তাঁদের দাবিতে অনড় থাকেন।

আরও পড়ুন—

শিক্ষা উপদেষ্টার সফরের পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। একইদিন দুপুরে শিক্ষক সমিতি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানায়, চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে ভিসিঅপসারণ করা হলে তারা তা মেনে নেবেন না।

এদিন দুপুরে ইউজিসির একটি তদন্ত কমিটির তিন সদস্য কুয়েট ক্যাম্পাসে পৌঁছে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। পাশাপাশি সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং ছয়টি ছাত্র ও একটি ছাত্রী হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ৪ মে থেকে পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী ক্লাস শুরু হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।

১৩ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা হল খোলার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ১৪ এপ্রিল রাতে সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হলে আন্দোলন আরও ঘনীভূত হয়। গত রোববার শিক্ষার্থীরা ভিসি’র পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিলে এবং তা পূরণ না হওয়ায় সোমবার থেকে তাঁরা অনশন শুরু করেন।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর