সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে বন্ধুকে গলা কেটে হত্যা

জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০২ এএম

শেয়ার করুন:

স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে বন্ধুকে গলা কেটে হত্যা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বন্ধুকে গলা কেটে হত্যা করে স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন মো. সেলিম হোসেন। ক্লুলেস এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের পেছনের প্রেম ও প্রতিশোধের গল্প এভাবেই তুলে ধরেন এই সেলিম।

সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. একরামুল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


বিজ্ঞাপন


নিহতের নাম রাশেদুল ইসলাম (৪০)। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসদরের ওয়াপদাবাঁধ এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে এবং পেশায় একজন পিকআপ চালক।

জানা যায়, গত শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন পিকআপ চালক রাশিদুল ইসলাম। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে তাড়াশ পৌরসভার আসানবাড়ি এলাকার এক ধানক্ষেত থেকে নিখোঁজ রাশিদুলের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ভাই তাড়াশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই ক্লুলেস এই হত্যা মামলার তদন্তে নামে জেলা পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আসানবাড়ি গ্রামের মৃত সামছুল হোসেনের ছেলে ও রাশেদুল ইসলামের বন্ধু মো. সেলিম হোসেনকে গ্রেফতার করে। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, ঘুমের ওষুধযুক্ত স্পিড বোতল, ক্লেমনের বোতল, মানিব্যাগ, রাশিদুলের মোবাইল ও একটি মেমোরি কার্ড উদ্ধার করেছে। পরে সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পুলিশ জানায়, সেলিমের স্ত্রী শেরজা পাশ্ববর্তী গ্রামের আউয়াল নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে যান কিন্তু তালাক না হওয়ায় স্ত্রীকে ফিরে পেতে মরিয়া ছিলেন তিনি। এই কারণে আউয়ালের প্রতি ক্ষোভ জমতে থাকে সেলিমের। পরে স্ত্রী শেরজার ব্যাগে প্রেমিক আউয়ালের একটি মানিব্যাগ, ছবি, সিমের কাগজ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি খুঁজে পান তিনি। তখনই পরিকল্পনা করেন, বন্ধুকে হত্যা করে সেই মানিব্যাগ মরদেহের পাশে রেখে দিলে আউয়ালকে ফাঁসানো যাবে এবং স্ত্রীকে ফিরে পাওয়া যাবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, পহেলা বৈশাখের আগে সেলিম একটি মেমোরি কার্ড, ঘুমের ওষুধ ও বাংলা মদ সংগ্রহ করেন। ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাশিদুলকে মদ খাওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ধান ক্ষেতে নিয়ে যান। স্পিড বোতলে মিশিয়ে দেন ঘুমের ওষুধ, আর ক্লেমনে রাখেন শুধুই মদ। রাশেদুল অচেতন হলে কোমর থেকে ছুরি বের করে তাকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে ধানক্ষেতেই লাশ ফেলে রেখে বাড়ি ফিরে যান তিনি।


বিজ্ঞাপন


সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি মো. একরামুল হোসাইন বলেন, বন্ধু রাশেদুলকে হত্যা করে স্ত্রীর প্রেমিক আউয়াল এর পরিচয় শনাক্তের কিছু জিনিস লাশের পাশে রাখেন সেলিম। যেন, সবাই সন্দেহ করে আউয়াল হত্যা করেছে। আউয়াল ফেঁসে গেলে সে আবার তার স্ত্রীকে ফিরে পেতেন। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রাশিদুলকে হত্যা করা হয়।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর