প্রবাস থেকে ফিরে ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেছিলেন তাইজুল ইসলাম সুজন (৩৫)। তবে সে চাকরি ছেড়ে ভিন্ন কিছু করার চিন্তা করেন তিনি। নিজ উদ্যোগে খালের ওপর তৈরি করেছেন একটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট—যা এখন ঝালকাঠিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের বেতরা বাউকাঠি খালের উপর প্লাস্টিক ড্রাম, কাঠ ও ত্রিপল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে এই ব্যতিক্রমধর্মী রেস্টুরেন্ট। ‘মাশাআল্লাহ ভাসমান রেস্টুরেন্ট’ নামের এই প্রতিষ্ঠানটি একসঙ্গে ৬০ জনকে বসে খাবারের সুযোগ দিচ্ছে। ঈদুল ফিতরের দিন উদ্বোধনের পর মাত্র ১৪ দিনের মধ্যেই রেস্টুরেন্টটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই ভিড় করছেন দর্শনার্থী ও ক্রেতারা।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিকেল থেকেই রেস্টুরেন্টে ভিড় বাড়তে থাকে। সেই অনুযায়ী খাবার প্রস্তুত করতে ব্যস্ত থাকেন মালিক সুজন ও তার দুই সহকারী।
বরিশালের বানারিপাড়া থেকে আসা রুবেল জানান, ‘ভাসমান রেস্টুরেন্টের কথা শুনে আমরা এখানে এসেছি। এখানকার পরিবেশ খুবই মনোরম। বিশেষ করে খাবারগুলো অনেক টাটকা লাগে। আর রেস্টুরেন্টটি পানির ওপর হওয়ায় দোল খাওয়ার মজাও পাওয়া যায়।’
বরিশাল থেকে আসা আসাদুজ্জামান ও তার মামা ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমরা মোটরসাইকেলে করে এখানে এসেছি। গ্রামীণ পরিবেশ ও খালের উপর রেস্টুরেন্টটি আমাদের বেশ ভালো লেগেছে। খাবারের মানও চমৎকার।’
রেস্টুরেন্টের উদ্যোক্তা সুজন বলেন, ‘রেস্টুরেন্ট চালুর পর থেকে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। অনেক দূর থেকেও মানুষ এখানে ঘুরতে আসে, আনন্দ করে। শুরুতে আমরা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, ফুচকা, চটপটি ইত্যাদি চালু করেছি। ভবিষ্যতে আরও কিছু আইটেম যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও জানান, রেস্টুরেন্টটি তৈরি করতে ৪০টি প্লাস্টিক ড্রাম ব্যবহার করা হয়েছে এবং এতে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার খাবার। যদিও বিদ্যুতের অভাবে কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
‘এখানে যদি বিদ্যুৎ থাকতো, তাহলে আরও ভালো কিছু করা যেতো,’ — বলেন সুজন।
ছোট পরিসরে হলেও এই রেস্টুরেন্ট এখন ঝালকাঠির এক অনন্য আকর্ষণ হিসেবে পরিচিত।
প্রতিনিধি/একেবি