ছয় দফা দাবিতে চলন্ত ট্রেন আটকে দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শত শত শিক্ষার্থী।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত খুলনা জংশন স্টেশন এলাকায় চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে দেন তারা।
বিজ্ঞাপন
‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে খুলনার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে অংশ নেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তারা ট্রেন চলাচল লাইন থেকে সরে যান।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ট্রেন আটকে দেওয়ার কারণে খুলনা স্টেশন থেকে চিত্রা, রকেট, মহানন্দা এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো ছেড়ে যেতে পারেনি। এতে করে সারা দেশের সঙ্গে খুলনার রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
খুলনা রেল স্টেশনের মাস্টার জাকির হোসেন জানান, খুলনা স্টেশন থেকে চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যায়। তবে খুলনা জংশন স্টেশনের আগে খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ট্রেনটি আটকে দেন।
এ সময় ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেসসহ রকেট ও মহানন্দা এক্সপ্রেস ট্রেনও খুলনা স্টেশনে আটকে পড়ে। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হলে, প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন এবং ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে অনিয়মিত পদোন্নতি বাতিল:
অবৈধভাবে পদোন্নতি পাওয়া ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় হাইকোর্টের মাধ্যমে বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি পদবি পরিবর্তনসহ সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে।
২০২১ সালের গোপন নিয়োগ বাতিল:
রাতে গোপনে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে এবং বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধনের দাবি জানানো হয়।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে বয়সসীমা নির্ধারণ:
যেকোনো বয়সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ বাতিল করে উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালুর দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। একাডেমিক কার্যক্রম ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালনার কথাও বলা হয়।
ডিপ্লোমা পাস শিক্ষার্থীদের সংরক্ষিত পদে নিয়োগ নিশ্চিত:
উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (১০ম গ্রেড) পদে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি পাসকৃতদের জন্য সংরক্ষিত কোটা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। এছাড়া, যেসব প্রতিষ্ঠানে তাঁদের নিম্নমানের পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ জনবল নিয়োগ:
কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত ব্যক্তিদের নিয়োগ বন্ধের দাবি জানানো হয়। এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় ও সংস্কার কমিশন গঠন:
কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করে দক্ষ জনসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠনের দাবি জানানো হয়।
প্রতিনিধি/একেবি