বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

ছাত্রদল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি, পিস্তল-গুলিসহ ভাড়াটে কিলার আটক

জেলা প্রতিনিধি, জয়পুরহাট
প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

ছাত্রদল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি, পিস্তল-গুলিসহ ভাড়াটে কিলার আটক
আটক আসামিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেনকে হত্যার উদ্দেশে তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড পিস্তলের গুলি ছুঁড়েছে দুবৃত্তরা। ওই ঘটনায় বিদেশি পিস্তল ও ৬ রাউন্ড গুলিসহ একজনকে আটক করেছে জনতা। এসময় সঙ্গে থাকা আরও ৫ জন পালিয়ে গেছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে পাঁচবিবি শহরের পৌর সুপার মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।


বিজ্ঞাপন


ঘটনার পর শহরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।  

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম।      

শামীমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া আটক ব্যক্তির নাম কোয়েল মোল্লা (২৮)। তিনি ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার কুষ্টপুর গ্রামের শাহাদত মোল্লার ছেলে। জনতার মারপিটে আহত হয়ে কিলার বর্তমানে পুলিশ পাহারায় জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার ছিল পহেলা বৈশাখ। সারাদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাত ১০টার দিকে পাঁচবিবি পৌরশহরের সুপার মার্কেটের এক দোকানের সামনে সাবেক জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেন, পৌর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ সজল ও বায়োজীদসহ বেশকয়েকজন মিলে গল্প করছিলেন। এসময় দুটি মোটরসাইকেল যোগে ছয়জন অপরিচিত লোক এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফিল্মি স্টাইলে শামীমকে উদ্দেশ্যে করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। এরই মধ্যে স্থানীয় জনগণ ও শামীমের সঙ্গে থাকা অন্যরা তাদের ধাওয়া করে কোয়েল নামে একজনকে আটক করে। সঙ্গে থাকা অন্যরা তখন পালিয়ে যায়। উত্তেজিত জনতা কোয়েলকে গণধোলাই দিলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। পরে তাকে পুলিশ পাহারায় জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।


বিজ্ঞাপন


প্রত্যক্ষদর্শী জেলা যুবদলের সাবেক সদস্য হারুনুর রশিদ সজল বলেন, সারাদিন কাজ শেষে রাত ১০টার দিকে আমি, শামীম ও বায়োজীদসহ বেশ কয়েকজন পৌর সুপার মার্কেটের সামনে বসে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করে দুটি মোটরসাইকেলযোগে ছয়জন অপরিচিত লোক এসে আমাদের সামনে দাঁড়ায়। ওদের মধ্যে একজনের মাথায় হেলমেট ছিল, সে তাদেরকে বলে এই যে, ওই ব্যক্তি শামীম। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গেই কোনকিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা শামীমসহ আমাদেরকে লক্ষ্য করে ২/৩ রাউন্ড গুঁলি ছোঁড়ে। তখন আমরা বাঁচার জন্য চেষ্টা করি এবং শামীম শুয়ে পরে। তাদের ছোঁড়া গুলি আমাদের শরীরে লাগেনি।

তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে আমরা তাদের ধাওয়া করলে ওরা একটি মোটরসাইকেল স্থানীয় রাখী হোটেলের সামনে ফেলে সবাই পালিয়ে যায়। গুলি করার সময় আমি একজনকে দেখে চিনতে পারি এবং সে রাস্তা দিয়ে স্বাভাবিক জনসাধারণের মতো হেঁটে যাচ্ছিলেন। আমাকে দেখে তার কোমরে থাকা একটি রিভালবার ফেলে দিলে তখন আমরা তাকে ধরে ফেলি। রিভালবার উদ্ধার করে পুলিশের হাতে দেই। আমাদেরকে পরিকল্পিত হত্যার একটা মাস্টারপ্ল্যান।

তবে এ ‍ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেন এই মহূর্তে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

 

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জনতার হাতে আটক একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আটক ওই ব্যক্তির নিকট থেকে একটি রিভালবার, ম্যাগাজিন ও গুলি জব্দ করা হয়েছে। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং অন্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর