নদী রক্ষার সঙ্গে পারের মানুষের কথাও ভাবতে হবে

তিস্তা নিয়ে মহাপরিকল্পনাসহ যে পরিকল্পনাই করা হোক না কেন, নদীর স্বাস্থ্য রক্ষাসহ প্রাণ-প্রকৃতি ও নদীপারের মানুষের স্বার্থের কথা অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। অর্থের অপচয় করে তিস্তায় আর কোনো অকার্যকর প্রকল্প আমরা দেখতে চাই না। কারণ পানি চুক্তি ছাড়া কোনো প্রকল্প কার্যকরের সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ বলে মন্তব্য করেছেন নদী গবেষকরা।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ রংপুরে আয়োজিত তিস্তা কনভেনশনে বক্তারা এসব মন্তব্য করেন।

বক্তারা বলেন, পানি হলো প্রকৃতির এমন অত্যাবশ্যকীয় উপাদান, যাকে কেন্দ্র করে দুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে সভ্যতার পত্তন হয়েছে। অথচ কালের পরিক্রমায় উজানের দেশ ভারত কর্তৃক সেই পানির ওপর একতরফা নিয়ন্ত্রণ ভাটির দেশকে বিপদে ফেলছে। জীববৈচিত্র্য, জলবায়ু, ইকোসিস্টেমকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে একসময় ১২০০ নদীর অস্তিত্ব ছিল, নদীগুলো উজান থেকে ভাটির দিকে জালের মতো বিস্তৃত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। নিয়মিত ড্রেজিং না থাকায় তলদেশ ভরাট হয়ে কিছু নদী তার অস্তিত্বই হারিয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক নদী হিসেবে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর মধ্যে তিস্তাসহ ৫৪টি নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ইতোমধ্যে ভারত ৪৯টিতে বাঁধ দিয়ে শুষ্ক  মৌসুমে পানি সরিয়ে নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ভাটির দেশের প্রাপ্যতা ও নদীতে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রেখে দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ছাড়া উজানের দেশ একতরফা পানি প্রত্যাহার করতে পারে না। তারা আন্তর্জাতিক ফোরামে অভিযোগ তুলে তিস্তা সংকট সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি হলরুমে আয়োজিত কনভেনশনে প্রধান আলোচক ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা কমরেড খালেকুজ্জামান। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নদী বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট সাংবাদিক শেখ রোকন, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আলী রায়হান সরকার এবং বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড সাইফুল ইসলাম পল্টু।