৬০ বছরের পুরোনো বাড়িতে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেয়ালে আটকে দেওয়া হয়েছে। আইন ও আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জোরপূর্বক বাড়ির ঘর-দরজা ভেঙে প্রাচীর দিয়ে আট মাস ধরে একটি পরিবারকে বন্দী করে রাখা হয়েছে।
ঝিকরগাছা উপজেলার বামনালী গ্রামে স্থানীয় প্রভাবশালী মীর মনিরুজ্জামান মকবুল হোসেন এবং তার ভাই মীর মোশারফ হোসেনসহ তাদের লোকজন জোরপূর্বক রাস্তা বন্ধ করে দেয়াল নির্মাণ করে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেছেন।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী মীর আক্কাস আলী জানান, বামনালী মৌজায় মীরপাড়ায় ৯৮২ নং দাগে তার পিতার নামে রেকর্ডকৃত ১০ শতক জমি ও ক্রয়কৃত ১০ শতক জমিতে দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। ক্রয় করা জমির পূর্ব-পশ্চিম দিক দিয়ে বাড়িতে আসা-যাওয়ার জন্য রাস্তা রয়েছে। আগস্ট মাসে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার চাচাতো ভাই মীর মনিরুজ্জামান মকবুল হোসেন, মীর মোশারফ হোসেন, মীর মারুফ হোসেন, জনি, নাহিদ, রিন্টুসহ ৮ থেকে ১০ জন জোরপূর্বক বাড়ির ঘর-দরজা ভেঙে প্রাচীর দিয়ে আট মাস ধরে তাদের বন্দী করে রেখেছে।
ভুক্তভোগী ষাটোর্ধ মীর আক্কাস আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা এখন গৃহবন্দি হয়ে পড়েছি। জোর করে বাড়ির যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেয়াল তোলা হয়েছে, অথচ এই জমি আমার পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত। তাছাড়া, ছোটভাই মীর মুছাকেও বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে বাড়ির উঠান চষে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
এ ঘটনায় মীর আক্কাস আলী এবং মীর মুসা আদালতে মামলা করেন। আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাভিদ সারওয়ার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, নালিশী জমির প্রকৃত দখলদার হলেন বাদি। তবে, কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় মীর মুসা আদালতে ফের পিটিশন দাখিল করেন। এতে আদালত সরেজমিনে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদেশ দেন।
ঝিকরগাছা থানার ওসি তদন্ত মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘আমি সরেজমিনে তদন্ত করেছি, তবে প্রতিবেদন এখনও দাখিল করিনি। প্রাচীর দিয়ে বাড়ির যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত অমানবিক। তাছাড়া ওই জমি তাদের কিছু পৈত্রিক এবং কিছু কেনা।’
বিজ্ঞাপন
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ভুপালি সরকার বলেন, ‘যে জমি যাকেই হোক, কারো বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করার বিষয়টি অমানবিক। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রতিনিধি/একেবি

