গাজীপুর সাফারি পার্কে সাধারণ প্রাণী নিরাপদ কিন্তু দুর্লভ প্রাণী চলে যাওয়ার ঘটনায় প্রশ্ন রেখে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এখানে অনেক ধরনের পশুপাখি রয়েছে, যাদের কিছু সাধারণ কিছু দুর্লভ। সাধারণ প্রাণীগুলো নিরাপদ কিন্তু দুর্লভ প্রাণী চলে যাচ্ছে। এটা একটা বিরাট প্রশ্ন। দুর্লভ তারাই নেবেন যারা বিষয়টি জানে এবং বোঝে। তার মানে এখানে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র রয়েছে কিনা তা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে এবং তা ভেঙে দিতে হবে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
_(3)_20250409_171205609.jpg)
উপদেষ্টা বলেন, এভাবে দুর্লভ প্রাণীগুলো কীভাবে চুরি হলো এটি খোঁজে বের করতে হবে। আমি মনে করি এখানে যারা দায়িত্বে আছেন, নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন, ঘটনার আগে ও পরে তাদের ভূমিকা দেখতে হবে। একই ঘটনা যখন ঘটছে, তখন কেন এসব স্থান সিসিটিভির আওতায় আনা হয়নি, সিসি ক্যামেরা কেন কাজ করেনি? এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুলেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আপনি যখন ঘটনার ১৪ দিন পর মামলা করবেন তখন তো আর এসব হারিয়ে যাওয়া প্রাণী ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। এছাড়াও আজ একটি বিষয় প্রমাণিত একটি সংঘবদ্ধ চক্র আছে যারা বাংলাদেশকে বন্যপ্রাণী পাচারের রোড হিসেবে ব্যবহার করেন।
![]()
বিজ্ঞাপন
রিজওনা হাসান আরও বলেন, সাফারি পার্ক আর চিড়িয়াখানা এক নয়। সাফারি পার্কে দর্শনার্থীরা প্রাণীকে দেখবে প্রাণীকে ভালোবাসবে। এখানে প্রাণীগুলো যতটুকু সম্ভব প্রাকৃতিক পরিবেশে রাখা হয়। তবে এ পার্কে হাতিশালা, জাগুয়ার বেষ্টনী ও লেমুর বেস্টনীগুলোতে সে উপযুক্ত পরিবেশ রাখা হয়নি বলে পরিদর্শন করে জানান তিনি।
তিনি বলেন, কেন বারবার এমন ঘটনা ঘটছে, বিলুপ্ত যে সব বন্যপ্রাণী এখানে এনে আমরা রাখছি সে সব হারিয়ে যাচ্ছে। এটি খুঁজে বের করতে হবে। একই জায়গা থেকে যখন টিয়া পাখি, ময়না পাখি হারায় না, লেমুর হারিয়ে যায় তখন আপনাকে বুঝতে হবে এখানে একটি সমস্যা আছে। সে সমস্যাটি চিহ্নিত করতে হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সাফারি পার্কের পুরোটাই সুরক্ষিত করতে হবে। এখানে সিসিটিভি রাখতে হবে। তবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় দেখা গেছে, যেদিন অপরাধ ঘটে সেদিন সিসিটিভি ক্যামেরা কাজ করে না। এজন্য মনিটরিংটা নিশ্চিত করতে হবে।
![]()
উপদেষ্টা বলেন, বনবিভাগের লোকবল নিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এক দুই মাসের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে। নিয়োগের সঙ্গে আমাদের নিয়তটা ঠিক থাকতে হবে। সাফারি পার্কের কর্মকর্তাদের অবশ্যই আলাদা করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রাণীগুলো দেখে যেন মানুষের মনে হয় তারা ভালো আছে। সেজন্য আমাদের নিজস্ব যে চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি সংযোগ ঘটিয়ে দিচ্ছি। ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞ দল পরিদর্শনে এসে কিছু সাজেশন দিয়ে গেছেন।
উপদেষ্টা সাফারি পার্কের কোর সাফারিসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখেন এবং বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক, বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক সানাউল্লাহ পাটোয়ারী, সেন্ট্রাল সার্কেলের বন সংরক্ষক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন, গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক রফিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধি/এসএস

