শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

পাপ মোচনে যমুনায় গঙ্গাস্নান উৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল

জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৭ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
পাপ মোচনে যমুনায় গঙ্গাস্নান উৎসবে পূর্ণ্যার্থীদের ঢল

‘হে লৌহিত্য, আমার পাপ হরণ করো’- এই মন্ত্র উচ্চারণে পাপ-শাপ মোচনে মহাষ্টমীতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে গঙ্গাস্নান করতে হাজারো পুণ্যার্থীর ঢল নামে। গঙ্গাস্নানকালে সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ ভক্তরা। গঙ্গাস্নানের মাধ্যমে তারা বিশ্বাস করেন, জাগতিক সংকীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবরণে ঘেরা জীবন থেকে পাপ মুক্ত হবে।

শনিবার (৫ এপ্রিল) দিনব্যাপী উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ীতে ৩০০ বছরের পুরোনো সরাতলা কালীমাতা মন্দিরের পাশে যমুনা নদীতে গঙ্গাস্নান উৎসব ও মেলার আয়োজন করে খানুরবাড়ী, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও গোবিন্দাসী গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।


বিজ্ঞাপন


গঙ্গাস্নান মেলায় বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবার, বাঁশ-বেতের আসবাবপত্র, মাটি ও প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা, পুতুল, ঘোড়া, ট্রাক, গাড়ি, হাড়ি-পাতিল, মাছের দোকান, চিড়া-মুড়ি, দইসহ দোকানিরা তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পূণ্যার্থী ও ভক্তরা উৎসবের এ ব্যবস্থাপনা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার ভোর থেকে পূর্ণ্যস্নানে জেলার গোপালপুর, ঘাটাইল, কালিহাতী, মধুপুর, ধনবাড়ী, সখীপুর, বাসাইল উপজেলা এবং সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ও সরিষাবাড়ী জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা নানা শ্রেণি-পেশার নানা বয়সী হাজারও ভক্ত ও পূণ্যার্থী এখানে আসেন।

গঙ্গাস্নান করতে আসা পূণ্যার্থী ও ভক্তরা জানান, ভোর থেকে খানুরবাড়ী একটি গাছের পাশে নদী তীরে ভক্তদের আগমনে লোকারণ্যে পরিণত হয়। পূণ্যার্থীরা মনকে শুদ্ধি, পাপ মোচন, পবিত্রতা এবং মঙ্গল কামনা ও মনবাসনা পূর্ণে মানত দেন। এছাড়া মহাষ্টমীতে স্থানীয় লোকজনসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ মেলা দেখতে আসেন।

পুরাহিতগণ জানান, এই দিনে গঙ্গাস্নানের মাধ্যমে তাদের পাপ মোচন হয়। সেই সাথে তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে জগতের সকল জীবের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করেন। সেই বিশ্বাস থেকেই ভক্তরা এখানে আসে এবং স্নান করেন।


বিজ্ঞাপন


শিক্ষিকা রমা রানী দাস জানান, প্রতিবছরই আমি এখানে স্নান করতে আসি। এখানে যারা স্নান করবেন, তারা অনায়াসে পাপ থেকে মুক্তি লাভ করবেন। এই দিনে পার্বতী মহাদেবকে অন্যপূর্ণা পূজা দিয়েছিলেন। স্নান শেষে সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করি।

সন্তোষ কুমার দত্ত জানান, প্রতিবছরই এই দিনে যমুনায় স্নান করি। মন থেকে প্রার্থনা করি যেন সবার মঙ্গল হয়।

আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ঘোষ জানান, ভোর থেকে যমুনা নদীতে গঙ্গাস্নান উৎসব ও মেলায় পূণ্যার্থীদের সেবা দিতে বিভিন্ন ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। ক্যাম্প থেকে পূণ্যার্থীদের রান্না করা খাবার, স্নান ঘাটে কাপড় পাল্টানোর ব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তায় প্রশাসন থেকে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। পুণ্যার্থীরা উৎসবের ব্যবস্থাপনা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম জানান, গোবিন্দাসী তীর্থ স্নানে পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।

প্রতিনিধি/একেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর